Thursday, October 15, 2015

জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা বিষয়ে কিছু ব্যক্তিগত প্রস্তাবনা

[জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্তৃপক্ষ জনগণের কাছ থেকে উন্মুক্তভাবে মতামত আহ্বান করে। গণমাধ্যম নীতিমালার খসড়া পড়ার পরে আমার মনে হয়েছে এ বিষয়ে কিছু প্রস্তাবনা বা ভিন্নমত লিখে মেইলে বা ইমেইলে পাঠানো যায়। সে কথা ভেবে নিচের মতামত ইমেইলের মাধ্যমে প্রেরণ করেছিলাম। আজ(১৫ অক্টোবর, ২০১৫) তা ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশ করলাম। ]


তারিখ: ৩০ আগস্ট, ২০১৫

০১. (ক) জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালায় “অনলাইন গণমাধ্যম’এর সংঞ্জা
বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে।
বলা হয়েছে,

গণমাধ্যম বলতে .... সম্প্রচারকারী ব্যক্তি, সংস্থা বা
প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে।
দ্বিতীয় অধ্যায়ে বলা হচ্ছে-
সকল অনলাইন গণমাধ্যমকে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধন করতে হবে।

এখানে ব্যক্তিগত ব্লগ, নিজস্ব নামে প্রকাশিত ব্লগ, সামাজিক মাধ্যম যেমন
ফেসবুক/টুইটার ইত্যাদির নিজস্ব একাউন্টও ‘অনলাইন গণমাধ্যম’ হিসেবে
বিবেচিত হয়ে থাকলে তবে কোটি কোটি ব্যক্তিগত একাউন্টকে নিবন্ধনের
আওতাভুক্ত হতে হবে।

(খ) এছাড়া অনলাইনে ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত বা অবাণিজ্যিক বা নন প্রফিট
ওয়েবসাইটও অনেকে প্রস্তুত করে থাকে বা অনেকেই শখের বশেও ব্লগ বা
ওয়েবসাইটও প্রকাশ করতে পারে। এগুলোও ‘অনলাইন গণমাধ্যম’এর আওতায় থাকবে কি
না তা নির্দিষ্ট করা হয়নি। আর যদি এই সকল বিষয়ও তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়
তবে সে বিষয়ে দ্বিমত বা ভিন্নমত রয়েছে।
(গ) আমার মতামত হলো- অনলাইন গণমাধ্যমকে ১. বাণিজ্যিক ২. অবাণিজ্যিক ৩.
ব্যক্তিগত ৪. সামাজিক ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা প্রয়োজন। এবং তাদের মধ্য থেকে
কোন কোন ধরণের অনলাইন মাধ্যমকে নিবন্ধন করতে হবে এবং নিবন্ধনের জন্য কী
কী শর্ত থাকবে তা আলাদা করে দেয়া প্রয়োজন।
(ঘ) নিবন্ধন করার সময় সাধারণত সরকারী প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের
অনেকে গড়িমসি করে থাকে বা অনেকক্ষেত্রে ‘উপরি’ বা ‘ঘুষ’ দিয়ে তার
নিষ্পত্তি করে থাকে, তাই নিবন্ধনের নিষ্পত্তি ‘সরকারী সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষ’কে কত দিবসের মধ্যে করতে হবে এবং তা করা সম্ভব না হলে বা না
হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য যে ‘গণমাধ্যম’ অনুমোদন চেয়েছে তা প্রকাশ বা
প্রচারের অনুমতি পাবে বলে একটি নিয়মবিধি এখানে থাকা প্রয়োজন।

২. অনলাইন গণমাধ্যমে বা প্রচার মাধ্যমে সরকার বা কোনো প্রভাবশারী বাহিনীর
‘বিধি বিহীন’ হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে নীতিমালায় থাকা দরকার।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিধিসম্মত হস্তক্ষেপ কাম্য।
৩. বলা হয়েছে, আইন শৃংখলা বাহিনী বা সশস্ত্রবাহিনীর প্রতি কটাক্ষ
বিদ্রুুপ ইত্যাদি করা যাবে না। কিন্তু একইসাথে সুনির্দিষ্টভাবে অনেকসময়
স্পর্শকাতর কোনো বিষয়ে ’উগ্র’ ’সাম্প্রদায়িক বা হিংসা উস্কে দেয়ার মতো
পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত প্রচারনাও আমরা দেখতে পাই। অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালায়
এই বিষয়েও বিধিমালা থাকা প্রয়োজন। কোনো সশস্ত্র আইনশৃংখলা বাহিনী
কর্তৃপক্ষ ‘রাজনৈতিক’ বিষয়ে প্রভাবিত করতে পারে বা করে এমন কাজও বেনিয়মে
করতে পারবে না।
৪. সশস্ত্র বাহিনী বা আইনশৃংখলা কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে ‘রাজেনৈতিক’ বিষয়কে
প্রভাবিত করতে পারে বা যা নিয়ে একমাত্র রাষ্ট্রের রাজনৈতিক নির্বাচিত
কর্তৃপক্ষই মতামত দিতে পারে এমন বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনী বা আইনী বাহিনী
গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতে পারবে না তাও নীতিমালায় উল্লেখ করা প্রয়োজন।

৫. সর্বোপরি, নীতিমালায় যা-ই থাকুক না কেন ‘মতামত প্রকাশের স্বাধীনতায়’
হস্তক্ষেপ করা যাবে না এ ধরণের একটি মোটো নীতিমালার প্রথমে সংযুক্ত করা
দরকার।

ধন্যবাদ
মিঠুন চাকমা

সর্বাধিক পঠিত

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষাঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসংগ-১৯৪৭ সাল

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষা তারিখঃ ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ইতিহাস একটি জাতি বা জাতিসত্তা তথা জাতিসমষ্টিকে নানাভাবে প্রভাবিত কর...