আপোষহীনতার নাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। গর্বের একটি নাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনতার আশা আকাংখার প্রতীক পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্র যুব সমাজের ঐক্যবদ্ধ চেতনার নাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। সর্বোপরি দেশের প্রেক্ষিতে অগ্রগামী একটি সংগঠনের নাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। সংগঠনের পুরো নাম বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। সবার কাছে সংগঠনের পরিচয় পিসিপি এই সংক্ষিপ্ত নামে।
আজ ২০১৭ এর ২০ মে আমাদের প্রাণপ্রিয় এই সংগঠনের ২৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ এই সংগঠন তার শক্তি ও সামর্থ্য নানাদিক থেকে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। নানা ধরণের বাধা বিপত্তি আপোষকামীতা দোদুল্যমানতার বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রম করতে করতে এগিয়ে গেছে এই সংগঠন।
আজ আমরা ২০০০ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন কিভাবে হয়েছে তার সাধারণ সংকিপ্ত বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করবো।। আগামীতে এই লেখা আরো পূর্ণাঙ্গ করার প্রত্যাশা নিশ্চয়ই রাখি।
২০০০ সালে পালিত হয় এই সংগঠনের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। একইসাথে অনুষ্ঠিত হয় ১০ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল। খাগড়াছড়িতে এই কর্মসূচি পালিত হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশ ও র্যালী খাগড়াছড়ির খেুজুর বাগান মাঠে(বর্তমানে উপজেলা মাঠ হিসেবে পরিচিত) হবার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসন শেষ পর্যন্ত সমাবেশ ও র্যালি করতে অনুমতি না দেয়ায় সমাবেশ স্বনির্ভর মাঠে করতে হয়। তখন এই স্বনির্ভর মাঠে আজকের মতো বাজার গড়ে উঠেনি। আজকে যেখানে বাজার গড়ে উঠেছে সেখানেই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশাসন সমাবেশ ভন্ডুল করতে খাগড়াছড়ি পৌর এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে। প্রশাসনের মারমুখী অবস্থানের কারণে পূর্বনির্ধারিত র্যালি আয়োজন করা যায়নি।
উক্ত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের তৎকালীন সভাপতি ক্যহ্লাচিং মারমা(তিনি এখন বান্দরবানের থানছি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান)। সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কর্ণেল কাজী নুর উজ্জামান, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের সমন্বয়ক বদরুদ্দীন উমর, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যূরোর সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সঞ্চয় চাকমা, জাহাঙ্গীর নগর বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক মানস চৌধুরী, সাইফ ফেরদৌস, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী কবিতা চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জোনায়েদ সাকী, বাসদ ছাত্রলীগ সভাপতি ইমাম গাজ্জ্বালী, নারী আন্দোলনের নেত্রী সাইদিয়া গুলরুখ ও পিসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক চম্পানন চাকমা। এছাড়া উক্ত সমাবেশে সংগঠনের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রূপক চাকমা বক্তব্য রাখেন।
পরে ২১ ও ২২ মে দুইদিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কাউন্সিলে রূপক চাকমাকে সভাপতি ও চম্পানন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও ডমিনিক ত্রিপুরাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
২০০১ সালে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ১ যুগ পূর্তি বা ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয় ঢাকায়। ঢাকার অপরাজেয় বাংলা পাদদেশে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল ছাত্র সমাবেশ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচিতে বেলুন উড়িয়ে সমাবেশ উদ্বোধন করেন ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিত খান। উদ্বোধনের পরে র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে শেষ হয়। পরে বিকালে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। সভার থীম শ্লোগান ছিল- লাম্পট্য, নষ্টামি ও সুবিধাবাদিতার বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের ভুমিকা ও আজকের পার্বত্য চট্টগ্রামে করণীয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রূপক চাকমা। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের সমন্বয়ক বদরুদ্দীন উমর, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(বাসদ)এর আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান, ইউপিডিএফ নেতা অনিল চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী কবিতা চাকমা।
পিসিপির একযুগ পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত লিফলেটের শেষাংশে লেখা ছিল- লড়াই সংগ্রামের পথ কোন দেশে কোন কালে এত সহজ ছিলো না। আমাদের বেলায়ও এ কথা সত্য। আলোর বিপরীতে যেমন অন্ধকার থাকে, দেশপ্রেমিক সংগ্রামীর বিপরীতে তেমনি থাকে বেঈমান বিশ্বাসঘাতক।
এছাড়া এতে লেখা ছিল- যে কারো গণতাান্ত্রিক অধিকারের প্রতি পিসিপি শ্রদ্ধাশীল। একমাত্র গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সহনশীলতার ভিত্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসতে পারে।
এরপর ২১ ও ২২ মে দুইদিনব্যাপী ১১ তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ প্রধান প্রসিত বিকাশ খীসা। পরে মিল্টন চাকমাকে সভাপতি ও প্রমেশ^র চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
২০০২ সালে পিসিপির ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয় খাগড়াছড়িতে। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদন মংশে মারমার পিতা কংজরি মারমা। মংশে মারমা ছিলেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য। তিিিন ১৯৯৯ সালের ৩ ডিসেম্বর শহীদ হন। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(বাসদ-মাহবুব) এর আহ্বায়ক আ. ফ. ম. মাহবুবুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের নেতা ও লেখক শিবিরের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিমা আখতার হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আকমল হোসেন, প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী করিম আবদুল্লাহ, ইউপিডিএফ নেতা অনিমেষ চাকমা। এছাড়া সংহতি বক্তব্য লিখে পাঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মেঘনা গুহঠাকুরতা।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন শেষে তারপরদিন ২১ মে নারাঙহিয়া পাইওনিয়ার ক্লাবে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। উক্ত কাউন্সিলে প্রমেশ্বর চাকমাকে সভাপতি. মিঠুন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও স্বর্ণজ্যোতি চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষনা করা হয়।
এই কমিটির নেতৃত্বে পরে শিক্ষা সংক্রান্ত ৫ দফা দাবি উত্থাপন করা হয় এবং ভাষা সংস্কৃতি ও ইতিহাস চেতনার সংগ্রামে শরিক হোন এই আহ্বান জানিয়ে পিসিপির শিক্ষাসংক্রান্ত আন্দোলন শুরু হয়।
বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ২০০৩ সালে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়। চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের কর্মী ও বাংলাদেশ লেখক শিবির ঢাকা নগর সভাপতি কমরেড প্রাণেশ সমাদ্দার। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের ন্যায়সংগত আন্দোলনের প্রতি মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে সমর্থনব্যক্ত করেন। সকালে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা ও র্যালি অনুষ্ঠিত হবার পরে বিকালে মুসলিম হলে এক আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি চেতনার আন্দোলনে বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক দলের করণীয়।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতপূর্ব অধ্যাপক সুনীতিভূষণ কানুনগো, চবি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনিরুজ্জামান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। ইউপিডিএফএর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন রবি শংকর চাকমা।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি জেলাস চাকমা। এখানে প্রসংগত বলা প্রয়োজন যে, সংগঠনের কাজে সক্রিয় ভুমিকা না রাখার কারণে ১২ তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের নির্বাচিত সভাপতি প্রমেশ্বর চাকমাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে জেলাস চাকমাকে অন্তবর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছিল।
পরে ২১ হতে ২৩ মে তিনদিনব্যপী কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অধিবেশনে মিঠুন চাকমাকে সভাপতি, অলকেশ চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও দীপংকর ত্রিপুরাকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত কেের ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রচারিত লিফলেটে বলা হয়- এই ১৪টি বছরে শতশত মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে রাজপথ, হারিয়েছি অনেক সম্ভাবনাময়ী তরুণপ্রাণ সহযোদ্ধাদের। সংগঠনের অগ্রযাত্রার পরতে পরতে মিশে আছে কান্না-হাসি-ক্ষোভ-বেদনা, উদ্দীপ্ত উচ্চারিত শ্লোগান আর গৌরবদীপ্ত ছাত্র যুব জনতার প্রতিরোধ। আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যারিকেড ভেঙেছি-উদ্দীপ্ত হয়েছি। সামনের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। অধিকার আদায়ের যে শপথ নিয়ে আমাদের রাজপথের সংগ্রাম আমরা সেই অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বো না। আমরা জন্মেছি বাধার প্রাচীর ছিন্ন করার জন্যই।
সংগঠনের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে ২০০৪ সালের ২০ মে পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শওকত আলী’র লিখিত বক্তব্য পাঠ করে পড়ে শোনানো হয়। তিনি অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে সমর্থ হননি। তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্য পাঠ করিয়ে শোনানোর পরে মিঠুন চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের কর্মী প্রাণেশ সমাদ্দার, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, বাংলাদেশ ছাত্র কেন্দ্র’র সভাপতি রহমান মিজান, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল কান্তি দাস, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী সোনালী চাকমা, পাহাড়ি যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর চাকমা বক্তব্য রাখেন।
১৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল শ্লোগান ছিল, ’জাতীয় কলংক মোচন করে অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিবাদী ছাত্র সমাজ পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের পতাকাতলে সমবেত হোন’।
আলোচনা সভা শেষে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলা ভবনের মাতৃভাষা চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন সন্তোষ চাকমা, দীপংকর ত্রিপুরা ও অলকেশ চাকমা।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ তার ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২০০৫ সালে পালন করে শাসকগোষ্ঠীর ভাগ করে শাসন করার কূটকৌশল মোকবেলা করে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে। খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কাসেম ফজলুল হক। পিসিপির সভাপতি রুপন চাকমা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মৃদুল কান্তি দাস, বাংলাদেশ ছাত্র কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া জনি, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি সোনালী চাকমা, ইউপিডিএফ নেতা অনিমেষ চাকমা। সভা পরিচালনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দীপংর ত্রিপুরা।
এখানে বলা প্রয়োজন ২০০৪ সালের ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ১৪তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিল অধিবেশন চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। এতে রুপন চাকমাকে সভাপতি, দীপংকর ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক ও রিকো চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করেে ১৯ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষনা করা হয়েছিল। উক্ত কাউন্সিল থেকে নতুন দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। সমাপনী অধিবেশনে ইউপিডিএফএর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক প্রসিত বিকাশ খীসা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে আগামী দিনের লড়াই সংগ্রামে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পিসিপিকে অবশ্যই আদর্র্শিকভাবে সশস্ত্র হতে হবে। সকল ধরণের প্রলোভন, আত্মপ্রতিষ্ঠা ও ব্যক্তিস্বার্থপরতার উর্দ্ধে উঠে ছাত্রসমাজকে জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আগুয়ান সৈনিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।
২০০৬ সালে পিসিপির ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কেন্দ্রীয়ভাবে পালন করা হয়নি। তবে নান্যাচর, কাউখালী ও কুদুকছড়ি শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
২০০৬ সালের শেষ থেকে ২০০৮ সালের শেষের দিক পর্যন্ত দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এ পরিস্থিতিতে দেশে মিছিল মিটিঙ সভা সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় পিসিপি ২০০৭ ও ২০০৮ ও ২০০৯ সাল এই তিনবছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান আয়োজন করতে সমর্থ হয়নি। এরই মাঝে ২০০৭ সালের ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ঘরোয়া সভার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। উক্ত ১৭তম কেন্দ্রীয় কমিটি হিসেবে বিবেচিত করে দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর ত্রিপুরা। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনির্মল চাকমা। সকলের উপস্থিতি ও সম্মতিতে রিকো চাকমাকে সভাপতি, অংগ্য মারমাকে সাধারণ সম্পাদক ও ক্যহ্লাচিং মারমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। সভা থেকে সারাদেশ থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া পাহাড়িদের ভূমি বেদখল ও বিভিন্নভাবে মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ২০০৮ সালে সংগঠনের ১৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা থেকে একটি লিফলেট প্রকাশ করে। এই লিফলেটের শিরোনাম ছিল- অব্যাহত ভূমি বেদখল-হামলা-জাতিসত্তা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, শাসক চক্রের আন্দোলন ঠেকানোর গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে না, পিসিপির পতাকাতলে সমবেত হোন, আসুন! পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই বেগবান করি।
লিফলেটে বলা হয় জরুরি অবস্থার সুযোগ নিয়ে ’প্রতিনিয়ত ভূমি বেদখলের মহোৎসব চলছে। পাহাড়িদের নিজ বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করে বহিরাগত বাঙালিদের বসিয়ে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া গ্রেফতার, নিপীড়ন-নির্যাতন, ধর্মীয় পরিহানির মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে।
২০১০ সালের ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি ঢাকাস্থ পুরানা পল্টনের তাজুল অডিটোরিয়ামে সংগঠনের ১৮তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলন থেকে অংগ্য মারমাকে সভাপতি ও সুমেন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলা থেকে ২৪০ জন প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষক অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে বিদায়ী কমিটির সভাপতি রিকো চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের আহবায়ক মাসুদ খান, সংস্কৃতির নয়া সেতু'র লিমন, প্রগতির পরিব্রাজক দলের মাহাবুব মোস্তফা রাসেল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের পারভেজ লেনিন, বিপ্লবী ছাত্র সংঘের আশিষ, জাতীয় ছাত্রদলের আজিজুল ইসলাম, ল্যাম্পপোস্টের প্রিন্স মাহমুদ প্রমুখ। সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আকমল হোসেন। উদ্বোধনী আলোচনা সভা শেষে টিএসসি সড়কদ্বীপ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়।
২০১০ সালে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ২১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কেন্দ্রীয়ভাবে পালন না করে বিভিন্ন উপজেলায় একযোগে পালন করা হয়। মাটিরাঙ্গা, পানছড়ি, দিঘীনালা, মহালছড়ি, কাউখালীকে অনুষ্ঠিত উক্ত সভাসমূহ থেকে সভা সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি নগ্ন হস্তক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করা হয়। সভা থেকে বক্তাগণ সভা সমাবেশের উপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানান।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ১৯তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় খাগড়াছড়িতে ১১-১৩ জানুয়ারি, ২০১২ সালে। কাউন্সিলে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে সুমেন চাকমাকে সভাপতি, থুইক্যচিং মারমাকে সাধারণ সম্পাদক, আপ্রুসি মারমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। কাউন্সিলের বিভিন্ন অধিবেশনে তৎকালীন বিদায়ী সভাপতি অংগ্য মারমা ও তৎকালীন বিদায়ী সহসভাপতি ক্যহ্লাচিং মারমা সভাপতিত্ব করেন।
কাউন্সিলের শ্লোগান ছিল- সমাজ ও জাতীয় আন্দোলনে বিভেদ সৃষ্টিকারী এজেন্টদের প্রতিহত করুন! আসুন, অধিকার আদায়ের আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের গৌরবোজ্জ্বল পতাকা উর্দ্ধে তুলে ধরি!
কাউন্সিল অধিবেশন থেকে বক্তারা বলেন, সরকার শুধু নিপীড়ন নির্যাতন করে ক্ষান্ত নয়। ছাত্র-যুব সমাজকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে মদ-গাঁজা-হেরোইন ইত্যাদি মাদক যুবসমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। বক্তারা নিপীড়ন নির্যাতনের বিরুদ্ধে পাহাড়ে সমতলে সমানতালে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
পিসিপির ২২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর(২০১১) শ্লোগান ছিল-গোলামী-লেজুড়বৃত্তি ও আত্মপ্রতিষ্ঠায় জাতির মুক্তি নেই, জাতীয় মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ছাত্র সমাজ জেগে ওঠো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধের ৭নং সেক্টর কমান্ডার প্রয়াত কর্ণেল কাজী নুরুজ্জামানের সহধর্মিনী ও মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর এমরিটাস ড. সুলতানা সারওয়াতারা জামান। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমার সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেনইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, বাংলাদেশ লেখক শিবিরের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সহযোগী অধ্যাপক হাসিবুর রহমান, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নিরূপা চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শান্তিদেব চাকমা।অনুষ্ঠানে সংহতি জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন খাসি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিমল লংডকিরি, বিপ্লবী ছাত্র সংঘের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আশীষ শর্মা, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের জোট ভূক্ত সংস্কৃতির নয়া সেতুর কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার সম্পাদক আধ্যাপক জাহিদ হাসান ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক সামিউল আলম। এছাড়া সান্তাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন, প্রগতির পরিব্রাজক দল (প্রপদ) ও ল্যাম্পপোষ্ট অনুষ্ঠানে সংহতি জানান।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্যসিং মারমা এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুমেন চাকমা।
সমাবেশের উদ্বোধনী বক্তব্যে ড. সুলতানা সারওয়াতারা জামান বলেন, ’অনেক জায়গায় আন্দোলন হয়েছে এবং আন্দোলনে সফলতা এসেছে,আপনাদের আন্দোলন একদিন না একদিন নিশ্চয় সফল হবে। ’
২০১২ সালে সংগঠনের ২৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী খাগড়াছড়িতে পালন করা হয়। ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমা। উপস্থিত ছিলেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি অংগ্য মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রীনা দেওয়ান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আপ্রুসি মারমা। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক থুইক্যচিং মারমা। সভায় সচিব চাকমা বলেন, শেখ হাসিনা খালেদা জিয়া আমাদের অধিকার দেবে না। আমাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। তিনি ভূমি কমিশনের বিতর্কিত কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানান।
২৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রচারিত লিফলেটের শিরোনামায় লেখা ছিল- আপোষহীন সংগ্রামের ২৩ বছর। সংখ্যালঘু জাতির উপর বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল ও পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করুন।
লিফলেটের এক অংশে লেখা ছিল- পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করে না। তাদের আত্মমর্যাদাবোধ ছিল প্রবল, কখনো কারো কাছ থেকে হাত পেতে কোন কিছু চেয়ে নিত না। এ উন্নত মূল্যবোধে পচন ধরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে চলছে সুগভীর ষড়যন্ত্র।
২০১৩ সালে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ সংগঠনের দুইযুগ পূর্তি উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে। উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা। খাগড়াছড়ি নারাঙহিয়ায় খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি সালমান রহমান। সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক থুইক্যচিং মারমা।
সমাবেশে ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা বলেন, তরুণ প্রজন্মকে কামান, বেয়নেট উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন, পিসিপির নাম ভাঙিয়ে কেউ যেন ফায়দা লুটতে না পারে সেজন্য ছাত্রসমাজকে সজাগ থাকতে হবে।
দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে সংগঠন একটি লিফলেট প্রকাশ করে। লিফলেটের শিরোনামায় লেখা ছিল- পিসিপি প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পূর্তিতে আহ্বান, জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে আসুন, পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হই! লিফলেটের শেষে লেখা ছিল- যে শিশু একবার জেগে ওঠে, তাকে ঘুম পাড়াি গানে ঘুমানো যায় না। পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজ জেগেছে, তাদের আর হুমকিতে কিংবা প্রলোভনে বশীভূত করা যাবে না। দালাল-প্রতিক্রিয়াশীলদের দৌরাত্ম্যে আমরা ক্ষান্ত হব না। অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই চলবে।
পরে খাগড়াছড়ির সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ২২-২৩ মে দুইদিনব্যাপী ২০তম কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে থুইক্যচিং মারমাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিলাস চাকমা এবং সিমন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ২৯ সদস্য বিশিস্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিদায়ী কমিটির সভাপতি সুমেন চাকমা নতুন কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
দ্রষ্টব্যঃ লেখাটি এখনো অসম্পূর্ণ। পরে আরো তথ্য সংগ্রহ করে বিশদ ও পূর্ণাঙ্গ করার চেষ্টা করা হবে।