Showing posts with label খবর অন্য খবর. Show all posts
Showing posts with label খবর অন্য খবর. Show all posts

Sunday, July 30, 2017

লালা ভাইয়ের বিরুদ্ধে 'রাষ্ট্রদ্রোহ' মামলা


তারিখঃ ০৭ জুলাই/ ২০১৭
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা; লালা ভাই। এরশাদশাহী শাসনের অবসান ঘটাতে ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন করেছেন। তবে তাঁর সমসাময়িক অন্য ছাত্রনেতারা এরপরে বিত্তবৈভবপ্রাপ্ত এবং পতাকাশোভিতও হয়েছেন কেউ কেউ। লালা ভাই তাঁর স্বভাবসুলভ স্বাভাবিক ভিন্নচিন্তা, অবিলাসী ও মননশীল মানবিক মন নিয়ে কাজ করে গেছেন রাজপথে ময়দানে। তিনি কী পেরেছেন বা রাজপথে কিছু একটা করতে পেরেছেন কী না তা জানতে পারা যেত না, যদি তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না হোত!
আমরা জানি, সচরাচর তিনি ঢাকায় অনলবর্ষী বক্তব্য দেন। এবং এই বক্তব্যের বিষয়বস্তু অবশ্যই সরকার ও শাসকশেনির বিরুদ্ধে। তবে তাঁর তথ্যপূর্ণ বক্তব্য সাধারণ শ্রোতার জন্য আকর্ষণ সৃষ্টিকারী বলা যায়। যদিও হয়তো, শ্রোতা বিচারে বা সমাবেশে অংশগ্রহণকারী বিচারে হয়তো তিনি জাতীয়ভাবে কোটি জনগণের উপর প্রভাব রাখেন না। তবে তাঁর বক্তব্য যাঁরা শোনেন, তাঁরা তাঁর প্রতি কিছুটা আকৃষ্ট বা নিরাকৃষ্টও হন অবশ্যই। তা না হলে রাজশাহীর চারঘাটের বক্তব্যে আওয়ামীলীগের স্থানীয় শ্রোতাদের তো এতোটা 'হন্তদন্ত' ও হস্তউত্তোলিত ও মামলা রুজু করার জন্য বিশেষ চিন্তিত হবার কথা তো নয়!
তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার হোক এই দাবি রইল।
তিনি রাজশাহীর চারঘাটে কী বিশেষ বক্তব্য দিয়ে 'রাষ্ট্রদ্রোহ' মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন, তাও আমরা জানতে চাই। এতে আমরাও সতর্ক হতে পারবো! কারণ, একে তো ৫৭ ধারার ফারা, তার উপর 'রাষ্ট্রদ্রোহ' মামলা, এতো ভার কেই বা বহন করতে চাইবে! তাই বোঝাটা নিয়ে একটু ধারণা অন্তত এতে পাওয়া যাবে ও সতর্ক হওয়া যাবে!

Thursday, February 9, 2017

’যখন বঙ্গভবনে ছিলাম’- আলোকিত হবার একটি বই


বইটি তেমন বড় নয়, মাত্র একশ’ দুই পৃষ্ঠার। আর ঘটনা যে তেমন আছে তাও নয়। মাত্র কয়েকটি ঘটনার সমাহার। তবে এইসব ঘটনা জাতীয় জীবনের ইতিহাসের সাথে সম্পৃক্ত। দেশের ইতিহাসের অংশ এইসব ঘটনা। এই সকল ঘটনাবলী যা ছিল অপ্রকাশিত সাধারণের মাঝে সেগুলো আজ লেখকের লেখায় প্রকাশিত হয়ে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে।
ব্রিগেডিয়ার শামসুদ্দীন আহমেদ, একজন সেনা কর্মকর্তা। তিনি একসময় বেশ কিছুদিনের জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ভবন বঙ্গভবন-এ চাকরিসূত্রে অবস্থান করেছিলেন। সেখানে তিনি যা দেখেছেন, যেভাবে ঘটনাবলীকে বিশ্লেষণ করেছেন তা-ই আমরা তাঁর লেখায় দেখতে পাই। বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন প্রখ্যাত লেখক ও শিক্ষক কবীর চৌধুরী। মুখবন্ধের প্রথম অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন- প্রাসঙ্গিকভাবে লেখক নানা বিষয়ের অবতারণা করেছেন যা বিভিন্ন রুচির পাঠককে বিভিন্নভাবে আকৃষ্ট করবে। লেখক-পরিবেশিত বঙ্গভবন নির্মাণের ইতিহাস, স্থাপত্যকৌশল, বিভিন্ন কক্ষের বর্ণনা, সাজ-সরঞ্জাম, বঙ্গভবনের অতিথি-আপ্যায়ন এবং সেখানে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সরকারী ও আধাসরকারী অনুষ্ঠানাদির কথা ও আরো অনেক বিষয় কৌতূহলী পাঠককে তৃপ্ত করবে।
তিনি মুখবন্ধে লেখকের বিভিন্ন ঘটনার আরো অনেক বিষয় তিনি আলতো স্পর্শ করেছেন। তার মধ্যে জেনারেল এরশাদ ও তার স্ত্রী রওশন এরশাদের ‘পুত্রসন্তান লাভ, বঙ্গভবনের করিডোরের দেয়ালে নানাজনের ছবি থাকলেও শেখ মুজিবর রহমানের ছবি নেই, ‘হীন অনুকরণপ্রিয়তা’র কথা ইত্যাদি তিনি তুলে ধরেছেন।
এছাড়া এই বই পড়ে জানতে পারবেন একজন রাষ্ট্রপতি কিভাবে সামরিক আইন প্রশাসকের তল্পিবাহক হয়ে যান, জানতে পারবেন মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসে ইফতার আমন্ত্রণ নিয়ে জনগণের টাকায় বিলাসিতার কথা, অনেক নাম না জানা ব্যক্তির ক্ষমতার প্রতি মোহ, অর্থের প্রতি লোভ ইত্যাদির কথা। এবং একই সাথে নিশ্চয়ই অবিচল চারিত্রবৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের কথাও এতে পাবেন।
তবে আমার কাছে সেগুলো সাধারণ তথ্য হিসেবে মনে হয়েছে। লেখক অভিজ্ঞতা বর্ণনাসূত্রে সেসকল তুলে ধরেছেন। কিন্তু তার বই ঘটনার বর্ণনার চেয়ে বেশি। এখানে ঘটনার বর্ণনা গৌণ হয়ে যায় যখন তাঁর উদ্দেশ্য আমরা জানতে পারি। লেখক বইয়ের ভূমিকা অংশে যা লিখেছেন তা তুলে ধরছি-
আমার বক্তব্য উপস্থাপনার ত্রুটি থাকতে পারে। আমার ভাব প্রকাশভঙ্গি সঠিক নাও হতে পারে সব জায়গায়। কিন্তু আমি যা বলেছি এবং যা বলতে চেষ্টা করেছি তার মধ্যে কোন ক্রুত্রিমতা নেই। সব আমার মনের কথা। আমার হৃদয়ের কথা। জীবনে ভাল-মন্দ, সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় সম্বন্ধে আমার ব্যক্তিগত ধ্যান ধারণা ও চিন্তাভাবনা আছে যা আমি খুব সযত্নে লালন করি।
সেই ধ্যান-ধারণা থেকেই তিনি তার কর্মজীবনে অন্যায় দেখেছেন, দেখেছেন লোভ লালসা, ক্ষমতার মোহ, চাটুকারিতা। তবে তিনি তারপরেও নিজের নীতি নৈতিকতাবোধে অবিচল থেকেছেন। ব্যক্তির স্বার্থ না ভেবে ভাবতে চেযেছেন দেশের কথা, নীতির কথা, এথিকসের কথা, দায়িত্ববোধের কথা।
তিনি বলছেন-
আমরা অনেকেই ব্যক্তিগত স্বার্থ ও ক্ষমতার লোভে দলনায়ক বা দলনেত্রীর কাছে, রাষ্ট্রনায়ক বা সরকার প্রধানের কাছে এক একজন ফুলসাইজ ‘জি হুজুর’, ‘গোলাম হোসেন’ এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দ্বিধাবোধ করি না। ‘স্যার’ ও ‘ম্যাডাম’ কখনও ভুল করতে পারেন না এবং তাদের আদেশ অবশ্যই পালন করতে হবে, দেশ ও জনগণ জাহান্নামে যাক- এ ধরনের একটা মন মানসিকতা আমাদের মধ্যে প্রবলভাবে কাজ করছে।
তিনি ব্যক্তিগতভাবে তার চাকুরি জীবনে এই ধরনের ‘মন মানসিকতা’কে লালন করেননি বলে দাবি করেছেন।
তিনি তাঁর লেখায় তাঁর দৃষ্টিতে ন্যায়-অন্যায় ও ভাল-মন্দ ইত্যাদির বর্ণনা করেছেন। তিনি তাঁর বইয়ে লেখার শেষে যা মন্তব্য করেছেন সে দৃষ্টিভঙ্গি এবং একটি মহৎ আদর্শের কথা তিনি বলতে চেয়েছেন। তাঁর বইয়ের শেষ বাক্যটি হল-
আত্মমর্যাদাবোধ ছাড়া অন্য জাতির লেজুড় হয়ে কোন জাতি বড় হতে পারে না।
ভূমিকা অংশে তিনি লিখেছেন-
অনেকে বলেন, জনগণ ভাল হলে তাদের নেতা বা নেত্রীও ভাল হবেন। এটা ভুল ধারণা। জনগণকে ভাল করার জন্যই ভাল, সৎ, চরিত্রবান মেধাবী ও দেশপ্রেমিক নেতা-নেত্রীর প্রয়োজন।
তিনি তাঁর বইয়ে যে ঘটনাবলীর বর্ণনা করেছেন তা তাঁর এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই করেছেন। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা দিয়ে যা দেখেছেন তার মূল্যায়ন করতে চেয়েছেন। আগামী দিনে যারা দেশের সত্যিকার ভাল মহৎ কিছু করার স্বপ্ন দেখেন ও তার বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবেন তারা যেন এই অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে পারে সে চেষ্টাই তিনি করেছেন। ১৯৯২ সালে লেখা এবং ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত তার এই বই হয়তো নানা কারণে আরো অনেকের কাছে পৌঁছায়নি। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত, এই বই হল তাদের জন্য যারা দেশের ভাল কিছু করার জন্য আপ্রাণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এই বই পড়ে দেশের শাসনকামীরা উদ্বুদ্ধ হতে পারবেন মহৎ কিছু করতে। এই বই আরো অনেক পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করুক এই প্রত্যাশা রইল।

সত্যিকারের ভাল মনের মানুষ এবং একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন লেখক বা মানুষের লেখা পড়লে আমরা সবাই উপকৃত হবো এই প্রত্যাশা। বইটির নাম ‘যখন বঙ্গভবনে ছিলাম’। প্রকাশক- আগামী প্রকাশনী। প্রথম প্রকাশ- ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩। বইটির পৃষ্ঠাসংখ্যা- ১০২।

Friday, June 12, 2015

দেশপ্রেম বদমায়েশীর শেষ আশ্রয়

স্যামুয়েল জনসন নামে এক ব্যক্তি খুব জুতসই একটি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন- Patriotism is the last refuge of a scoundrel(লিংক). আরো লিংক। এই উদ্ধৃতির বাংলা করলে দাঁড়ায়- দেশপ্রেম হলো একজন বদমায়েশের শেষ আশ্রয়। এই 'বদমায়েশী' বোশ বোঝা যেতো কয়েকবছর আগে, যখন পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে অনেকে লেখালেখি করতেন,বলতেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন করার চক্রান্ত চলছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে 'দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী' যা করছে সব ভালোই করছে, এই কথাটি বলে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামকে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে দিতেন। এখন তারা তেমন জোরে কথা না বললেও তার ভুত যে দেশের প্রশাসনযন্ত্রের মধ্যে রয়েছে তা নানাভাবে উপলব্ধি করা যায়। তবে আজকের লেখা পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে নয়। আজকের লেখা 'দেশপ্রেমিক'দের নিয়ে। 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর,তুরিন আফরোজ, যিনি একজন ব্যারিস্টার, তাঁকে কে বা কারা একটি চিঠি দিয়েছেন। 
সমকাল পত্রিকায় ভাষ্যে-  
 চিঠিতে অশ্লীল ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করে তুরিন আফরোজকে হুমকি ও গালাগাল করা হয়েছে। 
আর এই হুমকি সম্বলিত চিঠি বিষয়ে তিনি সমকাল প্রত্রিকাকে বলেছেন- 

জানতে চাইলে তুরিন আফরোজ সাংবাদিকদের বলেন, 'ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘অবমাননাকর’ বিবৃতি দেওয়ায় ট্রাইব্যুনাল-২ এর দণ্ডপ্রাপ্ত ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ আদালত অবমাননার অভিযোগ  থেকে অব্যাহতি পাওয়া ২২ নাগরিকের কেউ এ চিঠি পাঠিয়ে থাকতে পারেন। কারণ চিঠির বিষয়বস্তুতে এ বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।'

একজন প্রখ্যাত ব্যারিস্টার, যিনি 'আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল'এর প্রসিকিউটর, তিনি বলছেন, '২২ নাগরিকের কেউ এ চিঠি পাঠিয়ে থাকতে পারেন'। আমরা জেনেছি, তিনি তাকে দেয়া হুমকি নিয়ে একটি জিডিও করেছেন। তবে তিনি জিডিতে কী লিখেছেন, কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, হুমকির জন্য কাকে বা কাদের সন্দেহ করছেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি। সংবাদ মাধ্যমসূত্রে জানতে পেরেছি, পুলিশ বলেছে, তদন্তের স্বার্থে তা বলা যাবে না! লিংক। কিন্তু, আমাদের কথা হলো, তিনি শুধুমাত্র 'ধারণা'র ভিত্তিতে কেন '২২ নাগরিক'কে সন্দেহ করবেন? 
এ বিষয়ে বাংলানিউজ২৪.কম এর লিংক শেয়ার করে আমি ফেসবুকে মন্তব্য করি- 
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ 'কোত্থেকে' কোন অজনা জায়গা থেকে কার লেখা একটি চিঠি পেয়েছেন। চিঠিতে হুমকি ছিলো বোধহয় তার বিরুদ্ধে। আর তিনি একজন ব্যারিস্টার, তিনি সেই চিঠি পাবার পরে 'রাজনীতি' শুরু করেছেন।তিনি বললেন,
" ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘অবমাননাকর’ বিবৃতি দেওয়ায় ট্রাইব্যুনাল-২ এর দণ্ডপ্রাপ্ত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া ২২ নাগরিকের কেউ এ চিঠি পাঠিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন তুরিন আফরোজ। তিনি বলেন, চিঠির বিষয়বস্তুতেও এটি উল্লেখ থাকায় তার এ ধারণা হচ্ছে।" (বাংলানিউজ২৪.কম)
তিনি 'ধারণা' করছেন। একজন 'ব্যারিস্টার' শুধুমাত্র 'ধারণা'র ভিত্তিতে কারো বিরুদ্ধে, ২২ নাগরিকের বিরুদ্ধে, কথা বলবেন, তাও আবার মিডিয়ায়(!), এটাই এখন 'রাজনীতি'!
ঐ 'ধারণা'র ভিত্তিতে তিনি. একজন 'ব্যারিস্টার' কথা বলেন, তা আজিকে দেখলাম! তাজ্জব বনে ঝাড়ে গেলাম!

 ২২ নাগরিকের মধ্যে আনু মুহাম্মদ একজন। এছাড়া অন্য মিডিয়ায় দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন অধিকার আদায় ও দেশের জনগণের স্বার্থরক্ষার লড়াইয়ে অগ্রনী ভুমিকা পালনকারী আনু মুহাম্মদের নাম নেয়া হয়েছে বলে ফেসবুক সূত্রে জানতে পারলাম। 

এখন দেশে কাউকে হুমকি দেয়া যেন ডাল আর ভাতের মতন! যে কেউ ইচ্ছে করলেই হুমকি দিতে পারেন! তবে এখনকার ট্রেন্ড হলো- হাতে লেখা চিঠিতে হুমকি দেয়া! এটা নতুন ট্রেন্ড! এবং বেশ বাজারও পাচ্ছে! অলরেডি অনেকজনককে হুমকি দেয়া হয়েছে। 
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকেও হুমকি দেয়া হয়েছে সেই 'চিঠি' দিয়েই। তিনি হুমকি পাবার পরে যেভাবে '২২ নাগরিকের' বিরুদ্ধে লেগেছেন, এবং নানাভাবে যেভাবে আনু মুহাম্মদকে এতে জড়ানোর চেষ্টা অনেকে করছেন, তাতে 'তাজ্জব বনে ঝাড়ে' যাওয়া ছাড়া কিছুই করার দেখছি না! 
এখন, সবচেয়ে বেশি চলছে, 'দেশপ্রেম' নিয়ে 'খেলা'। আগে ছিলো, 'ওই মিয়া, তোমার দাড়ি কই?, সেই যুগের। এখন বলতে শুনি, এই মি./মিজ/মিসেস(মিয়া নয়), তোমার 'দেশপ্রেম' কই?
তার এই ভাবসাব দেখে স্যামুয়ের জনসনের সেই বিখ্যাত উক্তি বারবার মনে পড়ছে- তিনি বলেছেন এবং অনেক সময় বারবার তার সেই কথা অনেকেই বলছেন, আমিও উদ্ধৃতি শেয়ার করছি- একজন বদমায়েশের শেষ আশ্রয় হলো, দেশপ্রেম।
এই উদ্ধৃতির সারকথায় সায় দিয়ে বলতে ইচ্ছে করে, যারাই এখন বেশিমাত্রায় 'দেশপ্রেম' দেখায় তাদেরই আমার কেন জানি 'বদমায়েশ' 'বদমায়েশ' মনেহয়। 
এরা দেশের জনগণের প্রতি প্রেম দেখায় না, দেশপ্রেমও দেখায়না, তারা বদমায়েশীসুলভ 'দেশপ্রেম'এর পরাকাষ্ঠা দেখায় বলেই আমার মনেহয়। 
এই 'দেশপ্রেম' নিয়ে রাজনীতির খেলা আশাকরি তুরিন আফরোজ, যিনি একজন ব্যারিস্টার, তিনি খেলবেন না। য
 

Saturday, May 2, 2015

চাঙমা উপন্যাস চাই মানে কী?

বাঙালঅদেজঅর সমাজ-মানজোরে কোচপিএ একজন লিঘিয়্যে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস-এ ভালকদিন আঘে ‘চাকমা উপন্যাস চাই’ নাঙে এগ্গান লেঘা লিক্কে। সিওত ত্যা চাঙমাউনোর চাঙমা  ভাচঅন্দি উপন্যাস লেঘানা দরকার ভিলি কমেন গুজ্জে। তা এই লেঘাগান চাঙমা লিঘিয়্যেউনোরে নানাভাবে ইনফ্লুএন্স গুজ্জে। কনঅজনে তা লেঘাআনঅর মানে ন বুজিনেই পোল্লেম চাঙমা উপন্যাস লিঘিয়্যে হোলেবার নাঙ গুরি ‘চাঙমা উপন্যাস’ লিঘিও ফিল্লোন!
হালিক তা লেঘাগানঅর মানে বোধঅয় আমি পুড়িএউনে এবঅ সঙ ন বুঝি!
সে বিষয়ে কধা ক’বার আঘে এগ্গান কধা কঙ, উপন্যাস অহলদে আধুনিক যুগঅর এগ্গান অনুষঙ্গ। এগ্গো জাদঅর দাঙঅর অহবার বা জাদঅর উজোনি জেবার লক্কন অহলদে সে জাদঅর ভাচঅত উপন্যাস লিঘিয়্যেউনে কেনজান নিদেনগুরি তারা জাদ-সমাজঅর জীঙানি-পত্তিদিনঅর চালচলন-মন-মনঅ কধা সিআনি ফুদি তুলি পাজ্জোন সিআনঅ উগুরে নির্ভর গরে ভিলি কোআ অহয়।
আর সে জাততোর ভাচঅত ডেইলি পত্রিকা-ম্যাগাজিন-সাইত্য পত্রিকা চেইনেই হবর পাআ জাই, সে জাততোর উজোন্দি বা মাচ্যুরিটি কেনজান উইয়ে্য সিআনি।
উগুরে এ বিষয়আন হেআল গুরিনেই মুই আখতারুজ্জান ইলিয়াসঅর ‘চাকমা উপন্যাস চাই’ লেঘাআনঅর কিজু মত বা কমেন বা মন্তব্য বিষয়ে কিজু কধা তুলি ধুরিম।
ত্যা তা লেঘাআনঅত কুইয়্যে, চাঙমা ভাচঅ ভিদিরে হোবিতে চর্চা বুউত উইয়্যে। চাঙমা জাদঅর মনঅ দুঘঅ কধা, রাগঅ কধা, অগঅমানঅ কধা ইআনি হোবিতেত দোলে ফুদি উত্তে।
আখাতারুজ্জামানে লিক্কে-
আবার তাদের পালাবার পালা। তবে এবার শুধু পালানো নয়। আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন এবার তারা ফুটিয়ে তোলে স্পৃহায়, সেই স্পৃহা বিস্ফোরিত হয় সংকল্পে। চাকমারা, পাহাড়িরা রুখে দাড়ায়।
চাকমা কবিতা আজ এই আত্মপ্রতিষ্ঠার সংকল্পে উত্তেজিত। নরনারীর প্রেম সেখানে গৌণ। প্রকৃতি, কেবল প্রকৃতি বলে কবিতায় ঠাঁই পায় না, প্রকৃতির হৃতসর্বস্ব চেহারা তাদের ক্রোধের কারণ। তাদের প্রকৃতি অন্য পেশিসর্বস্ব শক্তির দ্বারা লুন্ঠিত ও বিধ্বস্ত। …।
চাকমা কবিতা আজ গৃহচ্যুত, মৃত্যু ও হত্যায় নীল এবং একই সঙ্গে প্রতিরোধের সংকল্পে রক্তাক্ত।’
চাঙমা জাদঅ উগুরে নানা রিপ্রেশান-নিরজাতন-কস্ত লাগানা ইত্যাদি নানা কারণে চাঙমা জাদঅর মানুচ্চুনে তারা মনঅত দুক-কস্তঅ-রাগ ফুদে তুল্লোন তারা হোবিতেত।
হালিক বানা রাগ দুগ মনঅত বানি থানাই কী তোইলে সার কধা বা শেজ কধা!?
আখতারুজ্জামানে লিক্কে- “কবিতা হল মানুষের অনুভূতির সারাৎসার।”
অরথাত, হোবিতে অহলঅদে বানা মনঅ কধা ফুদে তুলিবার এগ্গান চিগোন চাগোন মাধ্যম মাত্র। সিওত বানা চিগোন গুরিনেই গোদা বেক্কানঅর বা মনঅত দুগঅর  কধাআনঅর তলাআন উধি এজে। হোবিতের ইআনওই সীমাবদ্ধতা।
অরথাত হোবিতে এগ্গো জাদঅর দুগঅ কধা, কস্তঅর কধা, তার আ উগুরে নানা আগাজঅ বাচ পুরিবার কধা ইআনি বাকবাক্যা গুরি ফুদে তুলি ন পারে। হোবিতেলোই সিআনি ফুদে তুলা ন জাই।
এগ্গো জাদঅর সে জিনিচ্চানি ফুদে তুলঅদে দরকার আরঅ অন্য সাইত্য মাধ্যম। এবং আর সিআনওই অহলঅদে বা সে মাধ্যমআনওই অহলঅদে উপন্যাস।
আর আখতারুজ্জান ইলিয়াসে সে দাঙর মাধ্যমআনওই বেবঅআর গুরিবাত্তেই কো্জুলি গুজ্জে লিঘিএউনোরে।
ত্যা লিক্কে-
“কিন্তু কেবল অনুভূতি ও প্রতিক্রিয়া আর সংকল্প দিয়ে চিহ্নিত হবে না, এর সবই আসবে জিজ্ঞাসা আর বিশ্লেষণের ভেতর দিয়ে। কেবল তখনই চাকমা আধুনিক ব্যক্তি তার জীবনজাপনে চাকমা ইতিহাস, সংগ্রাম ও ঐতিহ্যকে নতুনভাবে সন্ধান করার উদ্যোগ নেবে।”
বানা দুঘঅত আঘঙ, কস্তঅ পাঙর, চিদিরে-সেতলারউনে আমারে মারে ফেলেলাক জালে ফেলেলাক, শেজ গুরি ফেলেলাক, আমি  আর নেই আর, আমি দ শেজ ওই জিএগোই, আমা জাগাজুমি ভুই সয় সম্পত্তি কাড়ি ললাক, আমারে উবোত গুরি ফেলেলাক এই মনঅ দুগঅ কধা বানা কোই থ্যালে ন অবঅ আর।
কিত্তেই আমি এই দুগ-কস্তঅ পেইর, কিঙেরি এই দুগঅত্তুন কস্তঅত্তুন মুক্তি পেবঙ সে চিদেও আমাত্তুন আমা জাদঅত্তুন গরানা দরকার।সিআন বানা সমাজঅত, রাজনীতিত-ব্যক্তি জীঙানিত নয়, সিআন সাইত্যত লেঘাতঅ বা উপন্যাস অহলে উপন্যাসঅতঅ আমার ফুদেই তুলা পুরিবঅ।
ইক্কিনে পুজোর বা প্রশ্ন অহলঅদে আমি কি আমা সমাজঅত, জাদঅত, রাজনীতিত সে বিশ্লেষণঅত জেই? আমি কী কিত্তেই এনজান অহর, কী গল্লে কী পধ ধল্লে বা ফোলো গল্লে এই দুগঅতত্তুন মুক্তি পেবঙ সে চিদে গুরি?
এগ্গো জাদঅর প্রকৃত মুক্তি নিজঅত্তুনও্ই আনা পরে। আমি কি মুক্তির পধ লোইনেই চিদে গুরি। আমি কি তলবিচ গুরি আমা জাদঅর দুগ কস্তঅ লোইনেই? কিঙিরি মুক্তি পেবঙ সিআন লোইনেই বিশ্লেষণ গুরি?
জ্যা জা-ই কোদোক না ক্যানঅ, আমা জাদঅর সাইত্য হালিক এ প্রশ্নআনির উত্তর  নেতিবাচকভাবেই দ্যা। না, আমি আজলে হুম্বিক হেই, কস্তঅ পেই-দুগ পেই, আমার রাগ উধে, আমি রাগে শোজেই; হালিক আমি আজলেই বিশ্লেষণ ন গুরি।
জুনি গত্তঙ, তোইলে, আমি আখতারুজ্জামানঅ কধামতে হোবিতে ন লিঘিনেই উপন্যাস লিঘিলোঙুন! আমি তলবিচ গুরি চেলঙউন!
আর উপন্যাস মানেই অহলঅদে বিশাল বিরটা ক্যানভাস, বিরাট তার ব্যাড়/বেড়, বিরাট তার সময়, ভালুক্কুন তার মানুচ, ভালক্কানি তার মন, ভালক্কানি তার মনঅ কধা, ভালক্কানি তার সমস্যা।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসে আক্ষরিকভাবে বানা উপন্যাস লিঘিবাত্তেই কুইয়্যে সিআন নয়, ত্যা আজলে জাদঅর উপন্যাস লিঘিবাত্তেই কুইএ। ত্যা কুইয়্যে বানা ব্যক্তি নয় সমষ্টি লোইনেই চিদে গুরিবাত্তেই। 
আর সে কামআনওই ইক্কো আমা চাঙমা জাদঅর সাইত্যিক-সমাজঅ চিদে গুরিএ-রাজনীতিবিদ-সংস্কৃতি কর্মীউনোত্তুন গরা পুরিবঅ। 
আমার কি সে সেদাম আঘে?!!

Wednesday, April 8, 2015

আসামের গেরিলা সংগঠন উলফার প্রতিষ্ঠা দিবস ০৭ এপ্রিল

৭ এপ্রিল, ২০১৫। ১৯৭৯ সালের এই দিনে আসামের শিবসাগরের রঙঘর নামে এক এলাকায় আসামের স্বাধীনতাপন্থী কয়েকজন যুবনেতা ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম বা উলফা গঠন করেন। ভীমকান্ত বোরগোহাইন, পরেশ বড়ুয়া/বোড়া, রাজীব রাজকোনওয়ার প্রকাশ অরবিন্দ রাজখোয়া. অনুপ চেটিয়া প্রকাশ গোলাপ বড়ুয়া/বোড়া, প্রদীপ গোগোই, প্রকাশ সমীরণ গোগোই, ভদ্রেশ্বর গোহাইন , মিথিঙ্গা দাইমারী, চিত্রবন হাজারিকা, শশধর চৌধুরী প্রমুখ এই সংগঠনের নেতৃত্ব পর্যায়ে রয়েছেন। 
আসামের স্বাধীনতার ডাক দিয়ে এই সংগঠেনর জন্ম হয়েছিল। ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক আসাম গঠন ছিল তাদের মূলমন্ত্র।
উলফা তাদের সংগঠনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলার প্রারম্ভে ঘোষনা করেছে-
পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি তাদের নিজস্ব স্বতন্ত্র পরিচয় ও সমূহ উন্নতির জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। সাচ্চা কথা্ এই যে, সংগ্রামের ইতিহাস মানে হলো অন্যায়ের বিপরীতে ন্যায় এবং মিথ্যার বিপরীতে সত্যকে প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। এছাড়াও একটি জাতি যখন বিজাতীয় শাসনের অধীনে থাকে তখন তার স্বাধীনতা ও জাতীয় মুক্তির লড়াই ব্যতীত অন্য কোনো পথ খোলা থাকে না।
১৯৮৪ সালে উলফা তাদের কার্যক্রম জোরদার করতে তৎপরতা চালায়। তারা প্রথমে ব্যাপকভাবে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়। তারা নিজস্ব সশস্ত্র গ্রুপ গঠন করে । সংগঠনের কর্মীদের সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ভারতের নাগাল্যান্ডের ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড বা এনএসসিএন এবং মায়ানমার বা বার্মার গেরিলা সংগঠন  কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্টস আর্মি বা কে আই এ’র সহায়তা গ্রহণ করে বলে জানা যায়। উলফার প্রভাব আসামে বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত সরকার ১৯৮৬ সালের ৭ নভেম্বর এই সংগঠনকে বেআইনী ঘোষনা করে।
এখানে বলা প্রয়োজন আসাম হলো ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের মধ্যে অন্যতম এবং বড় একটি রাজ্য।
ভারত উলফার কার্যক্রমকে দমন করার জন্য সেখানে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে। ১৯৯০ সালের নভেম্বর মাসে অপারেশন বজরঙ, ১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বরে অপারেশন রাইনো, ২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে অপারেশন অল ক্লিয়ার এবং পরবর্তিতে অপারেশন রা্‌ইনো দুই নামে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে উলফাকে দমনের চেষ্টা চালায় ভারত।
এতে উলফার অনেক সদস্য আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। ১৯৯২ সালে উলফার উচ্চস্তরের কয়েকজন নেতা তাদের অনুসারীদের নিয়ে ভারত সরকারের কাছ থেকে আত্মসমর্পন করে।
উলফা এই সময় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পাশের দেশ বাংলাদেশ ও চীনে আশ্রয় নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালায় বলে জানা যায়। এবং এক পর্যায়ে তারা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং বাংলাদেশের ডিজিএফআই-এর সাথে তারা সম্পর্ক রেখে কাজ করতো বলে ভারত সরকার বিভিন্ন সময় অভিযোগ করে।
উলফার কিছু অংশ ভুটানেও আশ্রয় গ্রহণ করে। তবে ২০০৩ সালে ভুটান সরকার উলফাসহ বেশ কয়েকটি গেরিলা সংগঠনকে তাদের দেশ থেকে বের করে দিতে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে এবং উলফাকে সেখান থেকে সরে যেতে হয়।
২০০৪ সালের দিকে উলফা ভারত সরকারের সাথে আলোচনায় বসার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার পিপলস কনসালটেটিভ গ্রুপ নামক মধ্যস্থতাকারী একটি দলের মাধ্যমে ভারত সরকার উলফার সাথে আলোচনায় বসে। ২০০৬ সালের দিকে আবার সংঘাত শুরু হয়।  দুই পক্ষই আলোচনা থেকে সরে যায়।
২০০৯ সালের দিকে উলফার প্রধান অরবিন্দ রাজখোয়া বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হন। এরপর তাকে ভারতে ফেরত নেয়া হয়। সেখানে আবার নতুন করে ভারত সরকার উলফার সাথে আলোচনা শুরু করে। কিন্তু উলফার অন্যতম নেতা পরেশ বড়ুয়া ভারত সরকারের সাথে তাদের বন্দী নেতাদের মধ্যেকার আলোচনাকে মেনে নেননি। তিনি এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, তিনি আসামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কর্মী সংগ্রহ করে উলফার সামরিক শাখা শক্তিশালী করার চেষ্টা  চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে এরই মাঝে আসামের এই লড়াইয়ে প্রাণ কেড়ে নিয়েছে প্রায় ৩০ হাজার জনের। এখন সংঘাত তেমন না থাকলেও পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন উলফার কার্যক্রম চলতে থাকায় এবং আসামের জনগণের মাঝে সংগঠনের কার্যক্রম জারি থাকায় ভবিষ্যতে আসামের লড়াইয়ের পরিণতি কী হবে তা একমাত্র ভবিষ্যতই বলে দেবে এই মাত্র ধারণায় নেয়া যেতে পারে।
তথ্যসূত্র:

Tuesday, April 7, 2015

কোথা থেকে শুরু করতে হবে?

রাশিয়ার অক্টোবর বিপ্লবের সার্থক রূপকার ভ্লাডিমির  ইলিচ উইলিয়ানভ লেনিন ইস্ক্রা বা স্ফুলিঙ্গ নামক পত্রিকার ১৯০১ সালের মে মাসে প্রকাশিত ৪র্থ সংখ্যায় লিখেছিলেন ছোটো একটি লেখা। শিরোনাম, ‘Where to Begin?’।
সেই লেখার প্রথমে তিনি লিখছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ জোর দিয়ে রাশিয়ান সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা ‘কী করতে হবে’ এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। আমরা কী পথ গ্রহণ করবো ( যা নিয়ে গত ৮০ ও ৯০ দশকে আলোচনা হয়েছিল)তা নিয়ে এই আলোচনা নয়। বরং আমাদের পরিচিত পথ বা আদর্শের মধ্য থেকে আমরা কী বাস্তব পন্থা গ্রহণ করবো বা কীভাবে তা আত্মস্থ বা বাস্তবে রূপায়ণ করবো তা নিয়েই এই আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক কাজের পদ্ধতি বা পরিকল্পনা নিয়ে এই আলোচনা।
এরপর তার লেখায় পার্টিতে চলমান বিভিন্ন চিন্তাধারা বা মতভেদ বিষয়ে তিনি কথা বলেন।
তিনি বলেন, লাইবনেখট-এর  উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হচ্ছে- ‘যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রেক্ষাপট বা পরিস্থিতির বদল হয় তবে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রণকৌশলও বদলে নিতে হবে।‘ (If the circumstances change within twenty-four hours, then tactics must be changed within twenty-four hours.”)
লেনিন পার্টিতে যারা উক্ত চিন্তা লালন করেন তাদের বিষয়ে বা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিষয়ে তার উক্ত লেখায় তী্ব্র সমালোচনা করে লেখেন-
কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে আন্দোলনের কৌশল বা পার্টি সংগঠনের বিশেষ কিছু বিষয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কৌশল বদলানো সম্ভব । কিন্তু সাধারণভাবে, ধারাবাহিকভাবে এবং আবশ্যিকভাবেই সংগ্রামী ধারার সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা বা জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই জারি রাখার প্রয়োজনয়তা আছে  কী না তা নিয়ে ২৪ ঘন্টা বা ২৪ মাসের মধ্যে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে পারে একমাত্র সার্বিকভাবে নীতি বিবর্জিত ব্যক্তিগণই।
অর্থাৎ, সংগঠন ও সংগ্রাম ও জনগণকে সংগঠিত করার জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি বা রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেছেন।

তিনি আরো বলছেন,
পরিবর্তিত পরিস্থিতি বা সময়ের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা নিতান্তই হাস্যকর। যে কোনো সময় তথা ‘একঘেয়ে শান্তিপূর্ণ’ সময়ে বা যেভাবেই বলি না কেন‘বিপ্লবী চেতনার ক্ষয়মানতার’ সময়েও সংগ্রামী ধারার সংগঠন গড়ে তোলা এবং রাজনৈতিক সংগ্রাম জারি রাখা আবশ্যিক অপরিহার্যভাবেই প্রয়োজনীয়। বিস্ফোরন্মুখ বা ঝাঁকুনির সময়ে সংগঠন দৃঢ় করতে গেলে দেরী হয়ে যাবে। মুহূর্তের মধ্যেই সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করার মতো প্রস্তুতি বা সক্রিয়তা পার্টির মধ্যে থাকতে হবে।
এরপর তিনি ‘২৪ ঘন্টার মধ্যে কৌশল বা রণকৌশল বদলের’ দৃষ্টিভঙ্গিকে ভ্রান্ত প্রমাণের জন্য আলোচনা টেনে নেন।
তিনি বলেন, কিন্তু এই ‘রণকৌশল’ তথা ‘কৌশল’ বদলানোর জন্য আবশ্যিকভাবেই প্রয়োজন একটি ‘রণকৌশল’। এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে বা যে কোনো সময়ে রাজনৈতিক সংগ্রাম সংঘটন করার মতো একটি করিৎকর্মা শক্তিশালী সংগঠন না থাকলে ধারাবাহিক কার্য পরিকল্পনা, দৃঢ়বদ্ধভাবে নীতিতে সম্মোহিত অবিচলতা, দ্রুততম উপায়ে কার্য সাধন ইত্যাদির প্রসঙ্গ বা প্রশ্ন আসে না বা থাকে না।
তিনি বারে বারে জনভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ও সংগ্রামের উপরই গুরুত্ব আরোপ করতে চেয়েছেন।
পরবর্তি আলোচনায় তিনি সন্ত্রাসবাদী কর্মপন্থা নিয়ে মতামত পেশ করেন। তিনি বলছেন,  কেন্দ্রীয় সংস্থার অস্তিত্ব ব্যতীত এবং স্থানীয়ভাবে বিপ্লবী সংগঠনের দুর্বল অস্তিত্ব থাকা মানে, এটি, বস্তুত, তা সন্ত্রাস মাত্রে পর্যবশিত হতে পারে।( Without a central body and with the weakness of local revolutionary organisations, this, in fact, is all that terror can be.)।
তিনি তৎকালীন তাদের সংগঠনের অবস্থার প্রেক্ষিতে ‘আক্রমণ হানো(To the assault)’ এই পন্থা ব্যবহারের পরিবর্তে ‘শত্রুর দুর্গকে ঘেরাও(Lay siege to the enemy fortress)‘ করার জন্য কর্মসূচি নিতে আহ্বান জানান। এরপরই তিনি লিখেন, পার্টির বিদ্যমান সমগ্র শক্তিকে এখনই আক্রমণের জন্য আহ্বান জানানো বর্তমান সময়ের করণীয় কর্তব্য হতে পারে না। কথায় নয় বরং কাজে বা বাস্তবে আন্দোলন পরিচালনায় সমর্থ এবং সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সমর্থ একটি বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার কাজ সম্পন্ন করা বর্তমান কর্তব্য হয়ে দাড়িয়েছে।
এরপর তিনি একটি প্রকাশনা বা প্রচারণামূলক পত্রিকার প্রয়োজনীয়তা কথা তোলেন। এই প্রকাশনার মাধ্যমে সারা রাশিয়ার নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করা যাবে বলে মত দেন।
সর্বশেষে তিনি বলছেন,
আমরা নিরন্তরভাবে ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত প্রস্তুতির কথা বলে আসছি। এবং এটা আমাদের চিন্তায় নেই যে  শুধুমাত্র নিয়মিত আঘাত অথবা সংগঠিত আক্রমণের মাধ্যমে স্বেচ্ছাচারীর পতন ঘটানো সম্ভব। এই ধরণের চিন্তা বা দৃষ্টিভঙ্গী হাস্যকর এবং গোঁড়ামীপূর্ণ।
অপরদিকে যথার্থতই এটা সম্ভব এবং ঐতিহাসিকভাবে অধিকতর সম্ভবপর যে, স্বেচ্ছাচার বা স্বৈরাচারিতার পতন হবে একটা স্বতস্ফূর্ত ঝাঁকুনি বা একটা অপ্রত্যাশিত রাজনৈতিক জটিলতার চাপে যা নিরন্তরভাবে প্রতিনিয়ত তাকে সকল দিক থেকে আশংকার মধ্যে রেখেছে।
তিনি আরো বলছেন,
কোনো রাজনৈতিক সংগঠনই জুয়াড়ীর মতো কোনো বিস্ফোরণ বা জটিলতা সৃষ্টির আশাকে ভিত্তি করে  তার কাজ চালাতে পারে না। যতই অপ্রত্যাশিত বা নিয়তি কিছুর উপর আমরা নির্ভরতা কমাতে পারবো ততই ‘ঐতিহাসিক মোড় ‘ ফেরানোর সময়ে আমরা অসচেতন বা অসাড় হয়ে কম থাকতে পারবো।
দ্রস্টব্য:  লেখাটি মার্ক্সিস্টস.অর্গ ওয়েবসাইট-এর Where to Begin? শীর্ষক লেনিনের লেখা থেকে সংক্ষেপ করে ভাবানুবাদ আকারে লেখা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে প্রেক্ষিত বিবেচনা করে লেখার অবতাড়না করা হয়েছে।
অনুবাদে দুর্বলতা থাকা স্বাভাবিক।

Tuesday, March 24, 2015

লি কুয়ান ইয়ু- দায়বোধ সম্পন্ন, কর্তৃত্ববাদী স্বপ্নছোঁয়া একজন

সিঙ্গাপুর নামে এক ছোট দ্বীপখন্ড
800px-Singapore-overview
বেশ কয়েক দশক আগেও এই দ্বীপখন্ড ছিলো জেলেদের মাছ ধরার এক জনপদ। ১৮১৯ সালে ব্রিটিশরাজ এই অঞ্চলকে ব্যবসায়িক কলোনী হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আয়তন ৭১৬ বর্গকিলোমিটারের(২৭৭ বর্গমাইল) কিছু বেশি। জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৫৫ লাখের মতো।জনপদে বসবাস করছেন মালয়ী-তামিল-চীনা এই তিন জাতির জনগণ। তবে প্রাপ্ত এক ডাটায় দেখা যায় সিঙ্গাপুরের মোট শ্রমশক্তির ৪৪ ভাগই বর্তমানে অন্য দেশ বা জাতি থেকে আগত।
১৯৪২ সালের দিকে জাপান এই অঞ্চল ব্রিটিশরাজ থেকে দখলে নেয়। ১৯৪৫ সালে জাপানের কাছ থেকে আবার তা ব্রিটিশদের হাতে চলে আসে। ১৯৫৫ সালে সিঙ্গাপুরকে স্বশাসনের অধিকার দেয়া হয়। ১৯৬৩ সালে এই্ অঞ্চলটি স্বেচ্ছায় মালয়েশিয়ার সাথে অঙ্গীভূত হয়। ১৯৬৫ সালের ০৯ আগস্ট এই অঞ্চল বিশ্বের আরেকটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
এরই মাঝে ১৯৫৪ সালে লি কুয়ান ইয়ু People’s Action Party (PAP) গঠন করেন। তিনি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৫৯ সালের নির্বাচনে তার দল সিঙ্গাপুরের ক্ষমতায় আসে। এবং তার নেতৃত্বেই সিঙ্গাপুর স্বাধীনতা লাভ করে। 
স্বপ্নছোঁয়া বাস্তববাদী লি কুয়ানের অগ্রাভিযান!
Lee kuan yew pictures10_0
১৯২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি চীনা এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক নাম হ্যারী লি কুয়ান ইয়ু। সিঙ্গাপুরের ইংলিশ স্কুলে তিনি ভর্তি হন। সিঙ্গাপুরে জাপান ও ব্রিটিশরাজের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়। এরপর তিনি কিছুদিন জাপানী প্রচারণা বিভাগের একজন সদস্য হিসেবে নিজের ইংরিজী শেখা জ্ঞানকে কাজে লাগান।
এরপর তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন লেখাপড়া করেন। পরে ক্যাম্ব্রিজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি সমাজবাদী ভাবাদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত হন। (তথ্যসূত্র: বিবিসি)
১৯৬৭ সাল। হাভার্ড ইউনিভার্সিটিতে বক্তব্যে তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।  তার বক্তব্যটি এতটাই আকর্ষণীয় ছিল।  পরদিন ক্রিমসন ইউনিভার্সিটির প্রকাশিত সংবাদপত্রে বলা হয়েছিল, ‘নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউ একদিন শুধু তার দেশের নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের গুটিকয়েক রাষ্ট্রনায়কের একজন হবেন, যারা অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে স্বদেশের উন্নতি ঘটাতে পারবেন। তার উচ্চাকাঙ্ক্ষাই তাকে একজন শক্তিশালী আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে গড়ে তুলবে।‘ (তথ্য সৌজন্য: বণিক বার্তা)
১৯৫৯ থেকে ১৯৯০ প্রায় ৩১ বছর তিনি সিঙ্গাপুরের কর্তৃত্ববাদী প্রশাসক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সিঙ্গাপুর শাসন করেন। প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে অবসর নেবার পরও  তিনি সাধারণভাবে সংসদের একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যান।
তিনি ক্ষমতায় থাকার সময় সিঙ্গাপুরকে বৈষয়িক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সোপান সীমায় নিয়ে যান। যে দেশ দারিদ্র্য প্রপিড়ীত এক দেশ হিসেবে বিবেচিত ছিল তিনি তার কর্তৃত্ববাদী শাসন শৃঙ্খলের দ্বারা তিনি সেই নগর সদৃশ সম্পনন্ন রাষ্ট্রকে সমৃদ্ধিসম্পন্ন উন্নত এক নগররাষ্ট্রে তার দেশকে পরিণত করেন। তাঁর বাস্তববাদীতার কারণে তিনি সম্মান ও মর্যাদা সমীহবোধ অর্জন করেছেন। কিন্তু তারপরেও তিনি বিতর্ক এড়িয়ে যেতে পারেননি। তার রাষ্ট্রে তিনি সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেননি।
স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়ার সুযোগ না দিয়ে তিনি তাঁর সমালোচনাকারীদের শাস্তি প্রদান করেছেন। তিনি দেশি-বিদেশী সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশনা অবাধ করতে দেননি। তিনি অনেক সাংবাদিককে জেলে পুরেছেন। তিনি বলেছেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা বা সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতাকে অবশ্যই সিঙ্গাপুরের একত্ববাদী চেতনার প্রয়োজনবোধের কাছে মাথা নিচু বা হেঁট করে রাখতে হবে। (“Freedom of the press, freedom of the news media, must be subordinated to the overriding needs of the integrity of Singapore,” he said.)
তিনি বলেছিলেন, সিঙ্গাপুরের অগ্রগতির স্বার্থে কিছু স্বাধীনতাকে বিসর্জন দিতে বা সমর্পন করতে হবে ।
সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি
১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতিতে জনপ্রতি জিডিপি ছিল ৫১১ আমেরিকান ডলার। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫১৮২ ডলারে।
১৯৬০ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জিএনপি বেড়েছে ১৫ গুণ।
হংকং এর পরে বিশ্বের মধ্যে এই দেশটিই সবথেকে উন্মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত।
নিউজিল্যান্ড ও স্কান্ডিনেভিয়ান দেশের মত সবচেয়ে কম দুর্নীতিপিষ্ট দেশ হলো সিঙ্গাপুর। দেশের নেতা মন্ত্রীরা যেন দুর্নীতিতে না জড়ায় তার জন্য মন্ত্রীদের বেতন করেছিলেন ১০ লাখ ডলার।
এই দেশটি বিশ্বের ১৪তম বৃহত্তম রপ্তানীকারক দেশ এবং ১৫তম বৃহত্তম আমদানীকারক দেশ।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে দেশটি বিশ্বের ১১তম।
কিন্তু তারপরও এই দেশটি শ্রম শোষনমূলক দেশ অপেক্ষা অধিক কল্যাণমুখী দেশ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে হয়তোবা।
এই দেশটিতে ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক জায়গা বৃক্ষ আচ্ছাদিত সবুজ গাছ গাছালিতে ভরা।  ছোটো এই দেশে ৫০টির অধিক পার্ক রয়েছে।
এই দেশের জনগণ আবাসন সুবিধা পেয়ে থাকে। সরকার এই অঞ্চলের জনগণে জন্য নিজ উদ্যোগে বাড়ি তৈরি করে দেয়।
স্বাস্থ্য সুবিধা নাগালের বাইরে নয়।
নেশা মাদকের হার কম।লি কুয়ান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় নিষিদ্ধ করেছিলেন জিউকবক্স, চুইংগাম ও প্লেবয় ম্যাগাজিন।
সেই লি কুয়ান ইয়ু মারা গেলেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর । স্বাভাবিক বয়সেই তিনি মারা গেলেন। তার নিউমোনিয়া হয়েছিল। তাঁকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। হাসপাতালের বেডে তাঁর মৃত্যু হলো।
তিনি ছিলেন তামিল মালয় চাইনিজ ইংরেজি ভাষায় দক্ষ। তিনি একজন একনায়ক। তিনি কর্তৃত্ববাদী। তিনি আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার, আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক।তিনি কঠোর একজন প্রশাসক। তিনি ‘একজন বীর, তিনি একজন নেতা‘। তিনি ‘ইতিহাসের বিশাল ব্যক্তিত্ব‘। তিনি ‘ বহুল সম্মানিত পরিকল্পনাবিদ এবং রাষ্ট্রনেতা’। তিনি বিশ্ব রাজনীতির একজন ‘অভিভাবক’ । তিনি স্বপ্নপূরণকারী! তিনি স্বাপ্নিক। তিনি বাস্তববাদী। এভাবেই মৃত এই লি কুয়ানকে নানা অভিধায় সম্মানিত করেছন বিশ্বের নেতা-রাষ্ট্রনায়ক-জনগণ। 
কিন্তু তিনি যা বলেছেন তাই করেছেন, তাই তিনি বলেছেন,
 ‘আমি অত্যন্ত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মানুষ। আমি কোনোকিছু করার সিদ্ধান্ত নিলে, জীবন দিয়ে তা করার চেষ্টা করি। সারা দুনিয়া তার বিরুদ্ধে গেলেও আমি তা করে ছাড়ি। যদি আমার কাছে তা সঠিক মনে হয়। আমি মনে করি, এটাই নেতার কাজ।’ (তথ্য সৌজন্য: যুগান্তরডটকম।)

তিনি মানে লি কুয়ান ইয়ু ভগবানের বুকে পদচিহ্ন এঁকে দিয়েছন কী না তা ভবি’র হাতে রেখে দিলাম আমরা!

Saturday, March 21, 2015

সমাজের শক্তি কোথা থেকে আসবে?


ছবির একপাশে ঝুলতে থাকা ফেস্টুনে লেখা রয়েছে-
জাতীয় দুর্দিনে শিক্ষিত তরুণ সমাজ অপদার্থের মত হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না 
দীঘিনালায় ইউপিডিএফ ও গণসংগঠনসমূহের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী-সক্রিয় সমর্থকদের নিয়ে ২০১৫ সালের মার্চের প্রথম দিকে এক গেট টুগেদারের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে টাঙানো বিভিন্ন ফেস্টুনের মধ্যে একটি ফেস্টুনে এই লেখা শোভা পাচ্ছিল।
এই লেখার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষিত তরুণ সমাজকে জুম্ম জনগণের মুক্তির আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানানো হয়।
সমাজের শিক্ষিত তরুণ সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে এর আগে অনেকে বলেছেন। এ নিয়ে বিতর্কও হয়েছে।কিন্তু দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে বিতর্ক করা এবং দায়িত্বশীলতার সাথে দায়িত্ব পালন করার মধ্যে দ্রষ্টব্যজনকভাবে আকাশ আর পাতালের মতো পার্থক্য রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।
এখানে তেমন কথা না বাড়িয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি উদ্ধৃতি পাঠকদের সাথে শেয়ার করছি। তিনি তার এক প্রবন্ধে  বলেছেন-

আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষিতলোক যে গবর্মেন্টের চাকরিতে মাথা বিকাইয়া রাখিয়াছেন, ইহার শোচনীয়তা কি আমরা চিন্তা করিব না? কেবল চাকরির পথ আরো প্রশস্ত করিয়া দিবার জন্য প্রার্থনা করিব? চাকরির খাতিরে আমাদের দুর্বলতা কতদূর বাড়িতেছে তাহা কি আমরা জানি না? আমরা মনিবকে খুশি করিবার জন্য গুপ্তচরের কাজ করিতেছি, মাতৃভূমির বিরুদ্ধে হাত তুলিতেছি এবং যে মনিব আমাদের প্রতি অশ্রদ্ধা করে তাহাকে পৌরুষক্ষয়কর অপমানজনক আদেশও প্রফুল্লমুখে পালন করিতেছি—এই চাকরি আরো বিস্তার করিতে হইবে?


দেশের শিক্ষিতসম্প্রদায়ের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করিতে হইবে। আমরা যদি স্বদেশের কর্মভার নিজে গ্রহণ করিতাম তবে গবর্মেন্টের আপিস রাক্ষসের মতো আমাদের দেশের শিক্ষিত লোকদিগকে কি এমন নিঃশেষে গ্রাস করিত? আবেদনের দ্বারা সরকারের চাকরি নহে, পৌরুষের দ্বারা স্বদেশের কর্মক্ষেত্র বিস্তার করিতে হইবে। যাহাতে আমাদের ডাক্তার, আমাদের শিক্ষক, আমাদের এঞ্জিনিয়ারগণ দেশের অধীন থাকিয়া দেশের কাজেই আপনার যোগ্যতার স্ফূর্তিসাধন করিতে পারেন আমাদিগকে তাহার ব্যবস্থা করিতেই হইবে। নতুবা আমাদের যে কী শক্তি আছে তাহার পরিচয়ই আমরা পাইব না।
তা ছাড়া, এ কথা আমাদিগকে মনে রাখিতে হইবে যে, সেবার অভ্যাসের দ্বারাই প্রীতির উপচয় হয়; যদি আমরা শিক্ষিতগণ এমন কোথাও কাজ করিতাম যেখানে দেশের কাজ করিতেছি এই ধারণা সর্বদা স্পষ্টরূপে জাগ্রত থাকিত, তবে দেশকে ভালোবাসো—এ কথা নীতিশাস্ত্রের সাহায্যে উপদেশ দিতে হইত না। তবে এক দিকে যোগ্যতার অভিমান করা, অন্য দিকে প্রত্যেক অভাবের জন্য পরের সাহায্যের প্রার্থী হওয়া, এমনতরো অদ্ভুত অশ্রদ্ধাকর আচরণে আমাদিগকে প্রবৃত্ত হইতে হইত না—দেশের শিক্ষা স্বাধীন হইত এবং শিক্ষিত সমাজের শক্তি বন্ধনমুক্ত হইত।

রবি ঠাকুরের উপরের এই উদ্ধৃতাংশ মনে মনে আত্মস্থ করতে পারলেই মনে হয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষিত জুম্ম তরুণ সমাজের দায়িত্ববোধ কী হওয়া উচিত তা পরিষ্কার হওয়া যাবে্।
আমাদের শিক্ষিত তরুণ সমাজকে দায়িত্ব কর্তব্য পালন বিষয়ে বিতর্ক-তর্ক বা ‘মু ফেনা ন গুরিনেই’দায়িত্বশীলতার সাথে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করার মতো বাস্তব করণীয় কর্তব্য পালনই মুখ্য হওয়া প্রয়োজনীয় বিধেয় বলে বিবেচিত।
এভাবেই সমাজ ও সমাজ গঠনের লড়াই বা সমাজ বিনির্মানের লড়াই বা অধিকারের লড়াই সংগ্রাম শক্তিশালী দৃঢ়ভিত্তি সম্পন্ন হতে পারবে বা হবে। এর অন্য কোনো ব্যতিক্রম বিকল্প আছে বলে মনে হয় না।

Tuesday, March 17, 2015

দীঘিনালায় সারাদিন

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে দীঘিনালা ভুমিরক্ষা কমিটির ব্যানারে আজ লংমার্চ-এর ডাক দেয়া হয়েছে। দীঘিনালা উপজেলা মাঠ থেকে বাবুছড়া পর্যন্ত লংমার্চের গন্তব্যস্থল ছিলো।দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটারে মত। বিজিবি কর্তৃক ২১ জুম্ম পরিবারকে উচ্ছেদ করে ৫১ ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তর স্থাপনের প্রতিবাদে এই লংমার্চের ডাক দেয়া হয়। লংমার্চ শান্তিপূর্ণভাবে করা হবে বলে ঘোষনা দেয়া হয়।
কিন্ত আজ ১৫ মার্চ সকাল থেকেই দীঘিনালায় বিরাজ করেছে অস্বস্তিকর পরিবেশ! সকাল থেকে শুনতে পাচ্ছি স্থানীয় টমটম বা ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালাতে দিচ্ছে না সেনা ও পুলিশ টহল দল। সকাল নয়টার দিকে যখন দীঘিনালা উপজেলা মাঠে বিভিন্ন জায়গা থেকে লংমার্চে অংশ নিতে জনগণ আসতে চেষ্টা করছিল তখন কবাখালী-মেরুং-মিইনী ব্রিজসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড়া চৌকি বসিয়ে গাড়ি আসা যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়।  লোকজন তারপরেও পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে যেতে শুরু করে। পৌনে দশটার দিকে উপজেলা এলাকা থেকে লংমার্চ শুরু হলে পথের মাঝখানে লংমার্চের প্রধান অংশকে আটকে দেয়া হয়।
পরে লংমার্চের আরেকটি টিম শান্তিপুর-নারিকেল বাগান এলাকা থেকে বাবুছড়ার দিকে রওনা দেয়। হাজার জনতার লংমার্চের সারির উক্ত দলটি কয়েক কিলোমিটার হেঁটে কার্বারী মুড়ো বা কার্বারী টীলা এলাকা আসে।
এ সময় আমি পথের পাশে অবস্থান করছিলাম। শুনতে পেলাম দ্রুতবেগে দুটো আর্মি পিকআপ আর একটি পুলিশের পিকআপ উত্তর দিকে বাবুছড়া থেকে আসছে। তখন বোধহয় বাজে ১২.১৫/২০ টা। গাড়িগুলো সমাবেশস্থলে পৌঁছতে না পৌঁছতেই শুনতে পেলাম ফায়ার হচ্ছে। কয়েক রাউন্ড ফায়ার হবার পর দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি দূরে রিপরিপ করে ধান ক্ষেত দিয়ে অনেকেই পালিয়ে চলে যাচ্ছে। এদিকে এলাকায় যুবকদের মাঝে তখন হঠাৎ যেন রণ দামামা বেজে উঠল! তারা দেখি ‘জগার পাত্তে পাত্তে’ বা চিৎকার দিতে দিতে সামনে এগোতে চাচ্ছে।
কয়েক মিনিট পর শুনলাম আর্মি-পুলিশ কয়েকজন আহত হয়েছে। লংমার্চে অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে শুনলাম।
বিকালে জানতে পারলাম মূল সমাবেশ থেকে আগামীকাল ১৬ মার্চ দীঘিনালা-খাগড়াছড়িতে একদিনের অবরোধ ঘোষনা দেয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ লংমার্চে বাধা দেয়া, কার্বারীমুড়ো বা কার্বারী টীলায় সমাবেশের উপর ব্রাশফায়ার, বিজিবি কর্তৃক অন্যায়ভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অনৈতিক ব্যবহার করে জুম্মভুমি জবরদখলের প্রতিবাদে, মিথ্যা মামলা-হুলিয়া প্রত্যাহারের দাবিতে এই অবরোধের ঘোষনা দেয়া হয়।
এদিকে কার্বারী টিলার হাজারো জনতার তখন যেন রোষ চেপেছে! তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবার রাজপথ দখলে নিয়ে গুলি-হামলা উপেক্ষা করে উদাল বাগান স্কুলের মাঠে একত্র হলো। সেখানে সমাবেশ চললো। চারদিকে সেনা-বিজিবি-পুলিশের টহল তখন জোরদার করা হয়েছে।
শান্তিপূর্ণভাবেই সমাবেশ শেষ হলো।
সভা শেষ হলে জনতা গাড়িতে করে সভা ছেড়ে যেতে চাইলে প্রশাসন বললো ‘গাড়ির চাকা ঘুরবে না’
বিকাল ৪.৫১টায় শুনলাম অংশগ্রহণকারীর মোট আটটি টমটমে থাকা ৪০ জনের মতো যুবককে প্রশাসন মিইনী ব্রিজে আটকিয়েছে।
দীঘিনালায় বিরাজ করছে থমথমে ভাব।
কিন্তু তারপরও দীঘিনালাবাসীর লড়াকু মনোভাব যেন জুম্ম জনগণকে জানিয়ে দিলো, লড়াই ছাড়া, লড়াই করে বাঁচা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পার্বত্য জুম্ম জনগণের হাতে আর অবশিষ্ট নেই।
প্রশাসনের অন্যায় খবরদারী, জবরদখলী জোর যার মুল্লুক তার নীতি যদি পরিবর্তিত না হয় তবে এই রোষ কোথায় যে গতি পায় তার দিশা আমার কাছেও নেই!
তবে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তির প্রতি অনুরোধ পার্বত্য জুম্ম জনগণের এই ফুঁসে ওঠা রোষ নিয়ে আপনাদের ভাবতে হবে। দিকে দিকে প্রশাসন-সরকারের অবমানিত-অনৈতিক আচার-বিচারবোধ নিয়ে পার্বত্য জুম্ম জনতা অতিষ্ঠ এখনো মনেমনে। তার প্রকাশ ঘটলে কী যে ঘটে তা বলা মুশকিল। এটি আবেগের কথা নয়, বরং একটি বার্তা প্রশাসনের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক মহলের কাছে।
ধন্যবাদ

Wednesday, September 17, 2014

১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবস নিয়ে

১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষাদিবস। দিনটি পালন করে বাংলাদেশের অনেক প্রগতিশীল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগঠন। ১৯৬২ সালের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ শরিফ শিক্ষাকমিশনের বাণিজ্যমুখীন শিক্ষাব্যবস্থা চালুর সুপারিশের বিরুদ্ধে হরতাল ডেকেছিল।
পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক প্রশাসক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ১৯৫৯ সালের ৫ জানুয়ারি শিক্ষা কমিশনের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষনা করেন। এই কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি তার একসময়কার শিক্ষক আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পশ্চিম পাকিস্তানের শিক্ষাবিভাগের সচিব এস এম শরিফকে নিয়োগ করেছিলেন। উক্ত কমিশনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ৪ জন ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ৬ জন সদস্য নিযুক্ত করা হয়। শিক্ষাকমিশনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোনাজাতউদ্দিন, ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আতোয়ার হোসেন ও ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ রশীদ।
কমিশন ১৯৬২ সালের ২৬ আগষ্টের মধ্যেই অন্তবর্তীকালীন এক প্রতিবেদন প্রেসিডেন্ট বরাবর পেশ করে। পরে ১৯৬২ সালে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট গন্থাকারে মুদ্রিত করা হয়। এই শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট পরে সকলের কাছে শরিফ শিক্ষাকমিশন রিপোর্ট হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি পায়।
শরিফ শিক্ষাকমিশনের রিপোর্টে কী ছিলো?
শরিফ শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে বহু বিষয়ের মধ্যে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো এবং যেসকল বিষয়ের কারণে এই রিপোর্টের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ সংঘটিত হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো-
০১. শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে ইংরেজিকে বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়। বলা হয় যে, জাতীয় জীবনে ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব রয়েছে। এতে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ডিগ্রি পর্যায় পর্যন্ত কারিকুলামে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক চালু করার সুপারিশ করা হয়।
০২. পাকিস্তানে যে সকল ভাষা রয়েছে সেসকল ভাষার জন্য অভিন্ন বর্ণমালা প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়। অর্থাৎ, বাংলা ভাষা বাংলা বর্ণমালায় না লিখে আরবি অথবা রোমান বা উর্দু বর্ণমালায় লেখার সুপারিশ করা হয়। একইসাথে বাংলা বর্ণামালার সংস্কারের সুপারিশও করা হয়।
০৩. তৎকালীন সময়ে ডিগ্রি পর্যায়ের শিক্ষাকোর্স দুই বছরে সমাপ্ত হতো। কমিশনের রিপোর্টে এই কোর্সের মেয়াদ তিন বছর করার সুপারিশ করা হয়।
০৪. এই কমিশনের রিপোর্টে যে বিষয়বস্তু সবচেয়ে বেশি বিতর্কের জন্ম নিয়েছে তা হলো, এই রিপোর্টে শিক্ষাকে ’অধিকার’ হিসেবে না দেখে শিক্ষাকে ’বাণিজ্য’ হিসেবে দেখা হয়েছিল, অর্থাৎ শিক্ষাকে ব্যবসার কাতারে নামিয়ে আনা হয়েছিল। রিপোর্টে ’অবৈতনিক শিক্ষার ধারণা’কে অসম্ভব বলা হয়। এতে বলা হয়,
”শিক্ষার জন্য জনসাধারণের নিকট হতে খুব সামান্যই অর্থসাহায্য পাওয়া গিয়াছে এবং আরো স্কুলের জন্য জনসাধারণ যতটা দাবি জানাইয়া থাকে ইহার অনুপাতে ব্যয় বহনের অভিপ্রায় তাহাদের কখনই দেখা যায় নাই।”(তথ্যসূত্র: বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, ১৮৩০ থেকে ১৯৭১; ড. মোহাম্মদ হাননান; আগামী প্রকাশন)
মোটকথা তৎকালীন ছাত্রসমাজ এই শিক্ষা কমিশনের প্রস্তাবিত শিক্ষানীতিসমূহকে প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষানীতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল।
শরিফ শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা
শিক্ষাকমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা শরিফ কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে হলেও মূলতঃ তৎকালীন সময়ে আইয়ুব খানের সামরিক স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে উভয় পাকিস্তানের জনগণের যে ক্ষোভ ছিলো এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬২ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান(বর্তমান বাংলাদেশ)-এর জনগণের যে জাতিসত্তার জাগরণ ঘটেছিল তাও এই আন্দোলনকে তুঙ্গে নিতে বিশাল ভূমিকা রেখেছিল।
শরিফ শিক্ষা কমিশন তার রিপোর্ট প্রকাশের পরে বিশেষতঃ যারা ডিগ্রি পর্যায়ে অধ্যয়ন করছিলো তারা তিন বছরের শিক্ষাকোর্সকে মেনে নিতে পারছিলো না এবং হঠাৎ করে ইংরেজি ভাষার মতো একটি বিদেশী অপরিচিত সাধারণ জীবনযাত্রায় অব্যবহৃত ভাষা চাপিয়ে দেয়ায় ছাত্ররা যারপরনাই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল।
ঢাকা কলেজ থেকে প্রথমে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। এম আই চৌধুরি নামে একজন ডিগ্রি পর্যায়ের ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। পরে অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও জগন্নাথ কলেজ, ইডেন কলেজ, কায়েদে আযম কলেজ(বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী কলেজ)-এর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীরাও এতে অংশগ্রহণ করে।
তারা সবাই মিলে ’ডিগ্রি স্টুডেন্ট ফোরাম’ নামে একটি ব্যানারে আন্দোলন গড়ে তুলেন।
বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্নস্থানে এই ব্যানারে আন্দোলন মিছিল সভা সমাবেশ ধর্মঘট চলছিলো।
প্রথমদিকে ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলনে তৎকালীন সক্রিয় ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ভূমিকা ছিলো না। তবে স্থানীয় ভাবে ঢাকা কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের ভূমিকা এতে ছিরো। পরে ১৯৬২ সালের ১০ আগস্ট ঢাকা কলেজ ক্যান্টিনে ¯œাতক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীরা এক সভায় মিলিত হয়। এতে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে নির্বাচিত ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক কাজী ফারুক আহমদ বক্তব্য রাখেন। এই বৈঠক থেকে ১৫ আগস্ট সারাদেশে ছাত্ররা সাধারণ ধর্মঘটের আহ্বান করে। এছাড়া ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ের সামনে সাধারণ ছাত্রদের অবস্থান ধর্মঘট আহ্বান করা হয়।
আন্দোলনের এই পর্যায়ে এসে ডিগ্রি স্টুডেন্ট ফোরাম’ ব্যানারের নাম বদলে প্রথমে ’ইস্ট পাকিস্তান স্টুডেন্টস ফোরাম’-এর ব্যানারে আন্দোলন চলে। পরে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়।
১৫ আগষ্টে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ছাত্র সমাবেশে প্রায় ২৫ হাজার ছাত্রছাত্রী অংশ নেয়। ছাত্র আন্দোলন ব্যাপক গতি পেতে থাকে। প্রতিদিন কোনো না কোনো স্থানে ছাত্ররা মিছিল সভা সমাবেশের আয়োজন করছিলো।
ছাত্রদের এই লড়াকু ভূমিকা দেখে পাকিস্তান সরকার ১০ সেপ্টেম্বরের অবস্থান ধর্মঘটের স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে। প্রেসনোট জারি করে ছাত্রদের সংযত হতে বলে। ছাত্ররা অবস্থান ধর্মঘট প্রত্যাহার করে। কিন্তু ১৭ সেপ্টেম্বর সারাদেশে হরতালের আহ্বান করে।
এই হরতালে শুধুমাত্র ছাত্রদের অংশগ্রহণ যেন না ঘটে, দেশের ব্যবসায়ী, শ্রমিক, চাকুরিজীবি, কৃষকরা যেন প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেয় তার জন্য ব্যাপক প্রচারণা অব্যাহত থাকে।
আন্দোলন স্তিমিত করতে চাল বা চক্রান্ত
ছাত্রদের শরিফ শিক্ষাকমিশন বিরোধী সংগ্রাম পূর্ব পাকিস্তানের জাতিসত্তার জাগরণের সংগ্রাম ও একই সাথে আইয়ুব শাহীর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দিকে মোড় নেবার পর্যায়ে চলে আসে। এই পরিস্থিতি দেখে পাকিস্তান সরকার আন্দোলনকে স্তিমিত করতে চেষ্টা চালায়। এই চেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার পূর্ব পাকিস্তানের সে সময়কার নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে ১০ সেপ্টেম্বর আটকাবস্থা থেকে মুক্ত করে দেয়। মোহাম্মদ হাননানের বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস বইয়ে বলা হয়- গুজব রটে যে, ’পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপক ছাত্র অসন্তোষ ও বিরাজমান আন্দোলনের পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতা করার জন্য সরকারই শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে মুক্তি দিয়ে ঢাকায় পাঠিয়েছেন’।
বলা হয়ে থাকে সোহরাওয়ার্দী ছাত্রলীগকে দিয়ে আন্দোলন স্তিমিত করতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন।
১৭ সেপ্টেম্বর হরতালের প্রস্তুতি
১৬ সেপ্টেম্বর ডাকসুতে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগ যৌথসভা আহ্বান করে। এতে মিছিলের কথা বলা হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে মিছিল শুরু হয়। মিছিলে তখন হাজার হাজার অংশ নেয়। মূলতঃ ছাত্রদের আন্দোলন হলেও দেখা যায় এই মিছিলে মেহনতি মানুষের উপস্থিতি ছিলো ৯৫ শতাংশের মতো। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঢাকার হাইকোর্টে মিছিলের গতিরোধ করে ও গুলি চালায়। এতে বাবুল নামে একজন নিহত হন। বাস কন্ডাক্টর গোলাম মোস্তাফা গুলিবিদ্ধ ও নিহত হন। ওয়াজিউল্লাহ নামে একজন গৃহকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময় তিনিও মারা যান। রাজধানীর রথখোলা থেকেও মেহনতি জনগণ মিছিল করে। পুলিশ ও আর্মি গুলি চালায়। ২৫০ জনের অধিক লোকজন এতে আহত হয়। দেশের অন্যস্থানেও মিছিল সংঘটিত হয়।
১৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ-সেনাবাহিনীর গুলি চালনা ও তিনজনকে খুনের প্রতিবাদে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ৩ দিনের শোক পালনের ঘোষনা দেয়। ২৪ সেপ্টেম্বর ছাত্ররা পল্টনে এক ছাত্রজনসভায় সরকারের প্রতি ’চরমপত্র’ ঘোষনা দেয়।
পরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্ণর গোলাম ফারুকের সাথে বৈঠক করেন। সরকার শরিফ শিক্ষাকমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের কাজ স্থগিত ঘোষনা করে।
এছাড়া ১৯৬৩ সালে যারা ডিগ্রি পর্যায়ে পরীক্ষা প্রদানের জন্য ফরম পূরণ করেছিল সরকার তাদের পরীক্ষা গ্রহণ না করে তাদের সবাইকে ’পাশ’ বা উত্তীর্ণ হিসেবে ঘোষনা করে। তবে ১৯৬২ সালের সারা বছরই আন্দোলন সংগ্রাম সংঘটিত হওয়ায় বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে মাত্র ২৭ দিন ক্লাশ চলেছিল বলে জানা যায়।
শরিফ শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের লড়াই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করে।

Wednesday, August 6, 2014

প্রসংগ সম্প্রচার নীতিমালা: সবাই সমান, কিন্তু কেউ কেউ অারো বেশি সমান!

বেতার ও টেলিভিশনের সম্প্রচার নীতিমালা বাংলাদেশ সরকার মন্ত্রীসভার গত ০৪ আগস্ট সোমবারের বৈঠকে খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। প্রচার মাধ্যমে খসড়া নীতিমালার বিভিন্ন দিক প্রচারিত হলে মিডিয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ ও সচেতন জনসাধারণ এ নিয়ে নানা বক্তব্য ও সমালোচনা প্রদান করেছেন। এমনকি সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া ঢাকায় পুড়িয়ে ফেলে সাংবাদিকদের দু’টি সংগঠন এই নীতিমালা না মানার ঘোষনা দিয়েছে বলে ইন্টারনেট মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেল।

সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে এত বিতর্ক সমালোচনা কেন শুরু হলো?

সম্প্রচার নীতিমালায় থাকা বক্তব্য বা বিষয়বস্তুই এই বিতর্ক ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে বলা যায়।

এতে থাকা যে সকল বিষয় বিতর্কের জন্ম নিয়েছে তা নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

০১. সশস্ত্র বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত কোনো বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ বা অবমাননাকর দৃশ্য বা বক্তব্য প্রচার করা যাবে না।

০২. অপরাধীদের দণ্ড দিতে পারেন এমন সরকারি কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার মতো দৃশ্য বা বক্তব্যও প্রচার করা যাবে না।

০৩. জনস্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনো বিদ্রোহ, নৈরাজ্য ও হিংসাত্মক ঘটনা প্রচার করা যাবে না।

০৪. রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এমন সামরিক, বেসামরিক বা সরকারি তথ্য প্রচার করা যাবে না।

০৫. নীতিমালায় আরও বলা হয়, কোনো জাতি বা জনগোষ্ঠী, দেশের মর্যাদা বা ইতিহাসের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনোকিছু, বিদেশি রাষ্ট্রের অনুকূলে যায় এমন কিছু প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে না।

০৬. টক শোতে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন না করার কথাও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়।

০৭. সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয়ে ক্ষতিকর কোনোকিছু প্রচার বা প্রকাশ না করার কথা বলা হয়।
তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথমআলো

এই বিষয়বস্তুর দিকে খেয়াল রাখলে জর্জ অরেওয়েলের দ্য এনিমল ফার্ম বইটির কথা মনেপড়ে। সেই বইয়ে তিনি প্রাণীসমূহের রাজত্বে কথা বলেছিলেন। প্রতীকী অর্থে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, ‘সাম্য’ বা ’সমতা’র কথা বলে আসলে ’শোষনের’ই রাজত্ব চলে। বাস্তবে রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায়ও আমরা ’জনগণেণর কল্যাণে’র নামে ‘শোষনমূলক ব্যবস্থা’ই চলতে দেখি।

এতে অমনুষ্য প্রাণীর শাসকশ্রেনীর শাসনকর্তার এক আইনে বলা হচ্ছে- All animals are equal, But some animals are more equal than others.

বাংলা করলে দাড়ায়, প্রাণীজগতের সবাই সমান, তবে কিছু প্রাণী অন্যদের চেয়ে আরো বেশি ‘সমান’। অর্থাৎ, সাম্য বা সমতার কথা বলা হলেও আদতে অসাম্য বা অসমতাকেই এই শাসনব্যবস্থায় জারি রাখা হয়েছে।

এখন আমরা সম্প্রচার নীতিমালার দিকে খেয়াল করি। তাতে প্রতি পদে পদে আমরা দেখতে পাবো, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি, আইন রক্ষাকারী বাহিনী বা ব্যক্তি, রাষ্ট্রীয় সংস্থা বা সংগঠনসমূহ বা ব্যক্তিগণ যেন সবসময় ‘মোর ইক্যুয়েল দেন আদারস’! তবে জর্জ অরওয়েলের উদ্ধৃতি থেকে ‘Animal’ শব্দটি বাদ দিয়ে শুধু ‘Man’/ ‘Men’ বসিয়ে দিলেই হবে!

এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য আর করছি না!

সর্বাধিক পঠিত

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষাঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসংগ-১৯৪৭ সাল

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষা তারিখঃ ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ইতিহাস একটি জাতি বা জাতিসত্তা তথা জাতিসমষ্টিকে নানাভাবে প্রভাবিত কর...