রাশিয়ার অক্টোবর বিপ্লবের সার্থক রূপকার ভ্লাডিমির ইলিচ উইলিয়ানভ লেনিন ইস্ক্রা বা স্ফুলিঙ্গ নামক পত্রিকার ১৯০১ সালের মে মাসে প্রকাশিত ৪র্থ সংখ্যায় লিখেছিলেন ছোটো একটি লেখা। শিরোনাম, ‘Where to Begin?’।
সেই লেখার প্রথমে তিনি লিখছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ জোর দিয়ে রাশিয়ান সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা ‘কী করতে হবে’ এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। আমরা কী পথ গ্রহণ করবো ( যা নিয়ে গত ৮০ ও ৯০ দশকে আলোচনা হয়েছিল)তা নিয়ে এই আলোচনা নয়। বরং আমাদের পরিচিত পথ বা আদর্শের মধ্য থেকে আমরা কী বাস্তব পন্থা গ্রহণ করবো বা কীভাবে তা আত্মস্থ বা বাস্তবে রূপায়ণ করবো তা নিয়েই এই আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক কাজের পদ্ধতি বা পরিকল্পনা নিয়ে এই আলোচনা।
এরপর তার লেখায় পার্টিতে চলমান বিভিন্ন চিন্তাধারা বা মতভেদ বিষয়ে তিনি কথা বলেন।
তিনি বলেন, লাইবনেখট-এর উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হচ্ছে- ‘যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রেক্ষাপট বা পরিস্থিতির বদল হয় তবে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রণকৌশলও বদলে নিতে হবে।‘ (If the circumstances change within twenty-four hours, then tactics must be changed within twenty-four hours.”)
লেনিন পার্টিতে যারা উক্ত চিন্তা লালন করেন তাদের বিষয়ে বা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিষয়ে তার উক্ত লেখায় তী্ব্র সমালোচনা করে লেখেন-
অর্থাৎ, সংগঠন ও সংগ্রাম ও জনগণকে সংগঠিত করার জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি বা রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি আরো বলছেন,
এরপর তিনি ‘২৪ ঘন্টার মধ্যে কৌশল বা রণকৌশল বদলের’ দৃষ্টিভঙ্গিকে ভ্রান্ত প্রমাণের জন্য আলোচনা টেনে নেন।
তিনি বলেন, কিন্তু এই ‘রণকৌশল’ তথা ‘কৌশল’ বদলানোর জন্য আবশ্যিকভাবেই প্রয়োজন একটি ‘রণকৌশল’। এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে বা যে কোনো সময়ে রাজনৈতিক সংগ্রাম সংঘটন করার মতো একটি করিৎকর্মা শক্তিশালী সংগঠন না থাকলে ধারাবাহিক কার্য পরিকল্পনা, দৃঢ়বদ্ধভাবে নীতিতে সম্মোহিত অবিচলতা, দ্রুততম উপায়ে কার্য সাধন ইত্যাদির প্রসঙ্গ বা প্রশ্ন আসে না বা থাকে না।
তিনি বারে বারে জনভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ও সংগ্রামের উপরই গুরুত্ব আরোপ করতে চেয়েছেন।
পরবর্তি আলোচনায় তিনি সন্ত্রাসবাদী কর্মপন্থা নিয়ে মতামত পেশ করেন। তিনি বলছেন, কেন্দ্রীয় সংস্থার অস্তিত্ব ব্যতীত এবং স্থানীয়ভাবে বিপ্লবী সংগঠনের দুর্বল অস্তিত্ব থাকা মানে, এটি, বস্তুত, তা সন্ত্রাস মাত্রে পর্যবশিত হতে পারে।( Without a central body and with the weakness of local revolutionary organisations, this, in fact, is all that terror can be.)।
তিনি তৎকালীন তাদের সংগঠনের অবস্থার প্রেক্ষিতে ‘আক্রমণ হানো(To the assault)’ এই পন্থা ব্যবহারের পরিবর্তে ‘শত্রুর দুর্গকে ঘেরাও(Lay siege to the enemy fortress)‘ করার জন্য কর্মসূচি নিতে আহ্বান জানান। এরপরই তিনি লিখেন, পার্টির বিদ্যমান সমগ্র শক্তিকে এখনই আক্রমণের জন্য আহ্বান জানানো বর্তমান সময়ের করণীয় কর্তব্য হতে পারে না। কথায় নয় বরং কাজে বা বাস্তবে আন্দোলন পরিচালনায় সমর্থ এবং সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সমর্থ একটি বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার কাজ সম্পন্ন করা বর্তমান কর্তব্য হয়ে দাড়িয়েছে।
এরপর তিনি একটি প্রকাশনা বা প্রচারণামূলক পত্রিকার প্রয়োজনীয়তা কথা তোলেন। এই প্রকাশনার মাধ্যমে সারা রাশিয়ার নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করা যাবে বলে মত দেন।
সর্বশেষে তিনি বলছেন,
তিনি আরো বলছেন,
দ্রস্টব্য: লেখাটি মার্ক্সিস্টস.অর্গ ওয়েবসাইট-এর Where to Begin? শীর্ষক লেনিনের লেখা থেকে সংক্ষেপ করে ভাবানুবাদ আকারে লেখা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে প্রেক্ষিত বিবেচনা করে লেখার অবতাড়না করা হয়েছে।
অনুবাদে দুর্বলতা থাকা স্বাভাবিক।
No comments:
Post a Comment