Tuesday, May 13, 2014

জনগণের জন্য মৃত্যুবরণ করা থাই পাহাড়ের চেয়েও ভারী

মাও সেতুঙ বলেছিলেন জনগণের জন্য মৃত্যুবরণ করা তাই পাহাড়ের চেয়ে ভারী। এই কথাটি তিনি বলেছিলেন চীনের কমউনিস্ট  পার্টির সদস্য কমরেড চাঙ সু তে-র স্মরণসভায়। কমরেড চাঙ সু তে কমউনিস্ট পার্টির গার্ড রেজিমেন্টের একজন সৈন্য। তিনি ১৯৩৩ সালে পার্টিতে যোগদান করেন এবং মহান লঙ মার্চে অংশ নেন। ১৯৪৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চীনের উত্তর শেনসির আনসাই কাউন্টিতে মারা যান।
১৯৪৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর কমউনিস্ট পাটি কেন্দ্রীয়ভাবে কমরেড চাঙ সু তে’র স্মরণে যে সভার আয়োজন করে তাতে তিনি এই কথা বলেন। তার এই উদ্ধৃতি এখন হরহামেশা ব্যবহার করা হয়।

মাও সেতুঙ ‘জনগণের সেবা করুন’ এই শীরোনামে যে ভাষন প্রদান করেন তাতে তিনি বলেন, সকলেই অবশ্যই মৃত্যুবরণ করবে। কিন্তু মৃত্যুর মধ্যে তারতম্য থাকে তার তাৎপর্যের কারণে। প্রাচীন চীনা লেখক সুমা চিয়েন(Szuma Chien) বলেছিলেন, যদিও মৃত্যুবরণ করা সবার ক্ষেত্রে শ্বাশত সত্য, কিন্তু কোনো কোনো মৃত্যু তাই বা থাই পাহাড়ের চেয়ে ভারী হতে পারে আর কোনো কোনো মৃত্যু হতে পারে বেলে হাসের পালকের চেয়েও হালকা। জনগণের জন্য মৃত্যুবরণ করা হলো থাই বা তাই পাহাড়ের চেয়ে ভারী। কিন্তু নিরযাতনকারী, নিপীড়নকারী ফ্যাসিস্টদের পক্ষ হয়ে মারা যাওয়া মানে হলো সেই মৃত্যু বেলে হাসের পালকের চেয়ে হালকা। কমরেড চাঙ সু তে জনগণের জন্য মৃত্যুকে বরণ করেছেন এবং তার মৃত্যু হলো তাই বা থাই পাহাড়ের চেয়েও ভারী।

সেই ভাষনে তিনি আরো বলেছিলেন, সকল সৈনিকদের প্রতি আমাদের কর্মীদের আন্তরিক নজর দিতে হবে। এবং যারা বিপ্লবী কাজে যোগ দিয়েছেন তাদের একে অপরের প্রতি সহমর্মী হতে হবে, ভালবাসতে হবে, সহযোগিতা করতে হবে।

তিনি আরো বলেছেন, এখন থেকে পার্টির যে কোন সদস্য তিনি সৈনিক বা রান্নাঘরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যে-ই হোন না কেন, তিনি যদি মারা যান তবে তাকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানোর জন্য সভা করতে হবে এবং তার স্মরণে অবশ্যই সভা করতে হবে। এভাবে আমাদের শোক প্রকাশ করে আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবো বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
তথ্যসূত্র: মার্কসিস্টস আরকাইভস

Saturday, May 3, 2014

বিপ্লব রহমান কী লিখেছেন?

বিদ্যুৎ না থাকায় এবং পরবর্তীতে আর পিসিতে বসার সুযোগ না হওয়ায় লেখাটি গতকাল ( 23 April, 2014)  শেষ করতে পারিনি। আজ সকালে একটু সময় পেলাম।

গতকাল আমার লেখাটি ফেসবুক এবং ব্লগে শেয়ার করার পরে মি. বিপ্লব রহমানের নোটে লেখার লিংক প্রদান করি। তিনি প্রত্যুত্তরে কিছু কমেন্ট করেন। কমেন্টের মূল ভাব হচ্ছে তিনি সিএইচটি২৪.কম এর ‘পরিচালক’মন্ডলী কে তার বের করতে যেন বেশী দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যতটা না টিনটিন ঘটনা বা লেখার বিভিন্ন অংশ নিয়ে আলোচনা বেশী করার জন্য বিপ্লব রহমানের প্রতি আমার আশা ছিলো তিনি তার ধারেকাছে না গিয়ে সেই ‘সিএইচটি২৪.কম’ এর  ’পরিচালক’ খোজার দিকে মন দিয়েছেন বলেই মনে হলো!

বিপ্লব রহমান কী লিখেছেন?

মন্তব্য নাম্বার-১
মিঠুন চাকমাকে ধন্যবাদ- অধমের নোটটি পড়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে প্রতি জবাবে ব্লগ লিখে দু-একটি কথা লেখার। কিন্তু তার অসামাপ্ত ব্লগ নোটটিতে যুক্তিতর্ক করার কোনো পয়েন্ট পেলাম না, একটি বিষয় বাদে। তিনি নিজের গা থেকে সিএইচ২৪.কম-এর অপসাংবাদিকতার হলুদ মুছে ফেলতে খুবই তৎপর। অবশ্য ওই নোটেই স্পষ্ট, তিনি সিএইচটি২৪.কম (জনপ্রিয়?) পরিচালকমন্ডলীকে আড়াল করতেও ব্যস্ত। কিন্তু হলুদ রংটি সত্যিই খুব বাজে, কটকটে। দেখুন, এই নোটের স্ক্রিন শট। আর টিনটিন চাকমা’র ব্যক্তিগত ফেসবুক স্ট্যাটাস – যা সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়- তাকে বিনা অনুমতিতে প্রকাশ্য ও প্রচার করাটি কতটুকু নৈতিক [এটি রীতিমত সাইবার ক্রাইম], আশাকরি মিঠুন চাকমা সে কৈফিয়তও দেবেন। শুভেচ্ছা রইলো।

মন্তব্য নাম্বার-২
মিঠুন, ফেসবুকের এই অ-আ-ক-খ রীতিটি না জেনেই ফেসবুকিং করছেন, ব্লগ লিখছেন, অন্তত তিন বছর তো হলো, নাকি চার বছর? যা হোক খুব অবাক হচ্ছি ভাই। টিনটিন চাকমার ফেবু নোটটি মোটেই সকলের জন্য উন্মুক্ত নয় [পাবলিক], এটি শুধু তার বন্ধু মহলের জন্যই উন্মুক্ত, কিন্তু সিএনচটি২৪.কম – এক দফায় বিনা অনুমতিতে এটিকে প্রকাশ্য করে নৈতিক অপরাধ করেছে। আর এখন আপনি এই পক্ষে স্বাক্ষী সাফাই গেয়ে আরেক দফায় নৈতিক অপরাধ করছেন। যা হোক, বোধকরি স্বীকার করবেন, প্রাইভেসি যে কোনো মানুষের জন্মগত অধিকার। কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, এমনকি রাষ্ট্রকেও এই অধিকার ক্ষুন্ন করার অধিকার দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে ফেসবুকেরও নির্দষ্ট কিছু নীতি রয়েছে। আপনি চাইলে তা-ও সরবরাহ করা হবে। কিন্তু খানিকটা সময় দিতে হবে যে ভাই। আবারো আপনাকে ধন্যবাদ

বিপ্লব রহমানের প্রথম মন্তব্যের প্রথম অংশে তিনি আমাকে ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ না’ করার জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন। এখানে প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে ‘উল্লেই চানা’ বা খোচানো আমার স্বভাব নয়। কারোর সম্পূর্ল ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কোনো বিষয়ে খোজখবর নেয়া বা তা নিয়ে  আলোচনা করার স্বভাবও আমার নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো বিষয় সামষ্টিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বলে প্রতীয়মান না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কারোর ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করাই ‘রিদি সুদোম’ বলে বিশ্বাস। সুতরাং বিপ্লব রহমানের এই বক্তব্য অংশের প্রতি আমার ‘সমর্থন’ এবং সর্বোপরি ‘সহানুভূতি’ও রয়েছে। কেউ বিপ্লব রহমানের ব্যক্তিগত পারিবারিক বিষয়ে আলোচনা করলে আমি  লজ্জ্বিত বোধ করি তো বটেই।

এরপর বিপ্লব রহমান খুচিয়ে তুলতে চেয়েছেন সিএইচটি২৪.কম এর পরিচালক মিঠুন চাকমা কি না তা জানার জন্য। এ বিষয়ে প্রথম অংশে আলোচনা করায় আমি আর কথা বাড়াচ্ছি না।


এরপর তিনি সাইবার এথিকস সম্পর্কে আমাকে ‘সবক’ দেবার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন – ‘টিনটিন চাকমা’র ব্যক্তিগত ফেসবুক স্ট্যাটাস – যা সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়- তাকে বিনা অনুমতিতে প্রকাশ্য ও প্রচার করাটি কতটুকু নৈতিক’?

জবাবে উপরের কথাই বলবো- যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো বিষয় সামষ্টিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বলে প্রতীয়মান না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কারোর ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করাই ‘রিদি সুদোম’ বলে বিশ্বাস।

এরপর আমি তাকে প্রশ্ন করি- কারো ফেসবুকের স্টেটাস উদ্ধৃত করা যায়্না সে সম্পর্কে আইন থেকে থাকলে জানাতে অনুরোধ করছি
এছাড়া মন্তব্য করি- আইন এখন নিজের পকেটে মানে ‘বিপ্লব রহমান’ যা বলেন তা-ই আইন!আমি মিঠুন চাকমা যা জানিনা তা জানিনা বলি।সুনির্দিষ্টভাবে আইনের ধারা উল্লেখ করে ‘সমালোচনা’ করুন

এ সকল কমেন্টের বিপরীতে বিপ্লব রহমান লেখেন-
প্রাইভেসি সর্ম্পকে এক দফা বলেছি। আশাকরি, মিঠুন এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই, তাই না? তাই ধরেই নিচ্ছি, এই পয়েন্টে আপনি একমত হয়েছেন যে, “টিনটিন চাকমার ফেবু নোটটি মোটেই সকলের জন্য উন্মুক্ত নয় [পাবলিক], এটি শুধু তার বন্ধু মহলের জন্যই উন্মুক্ত, কিন্তু সিএনচটি২৪.কম – এক দফায় বিনা অনুমতিতে এটিকে প্রকাশ্য করে নৈতিক অপরাধ করেছে।” নাকি, এ বিষয়ে একমত হননি? আইনের বিষয়ে পরে আসছি। আগেই বলেছি, খানিকটা সময় দিতে হবে। কেমন ‘

তিনি খানিক সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে আমি ফেসবুকের ‘টার্মস এন্ড প্রাইভেসী’ অংশ থেকে উদ্ধৃতি দিই। উদ্ধৃতি নিম্নরূপ(লিংক সংযুক্ত করি। )
Always think before you post. Just like anything else you post on the web or send in an email, information you share on Facebook can be copied or re-shared by anyone who can see it.

উপরের উদ্ধৃতিটি বা আইনটি ফেসবুকের। যার বাংলা মানে করলে দাড়ায়- পোস্ট করার আগে সর্বদা ভেবে দেখুন। ওয়েবে বা মেইলে আপনি যেমন পোস্ট করেন, তেমনি আপনি ফেসবুকে যে তথ্য শেয়ার করেন তা কপি অথবা পুন:শেয়ার করা যাবে যেকোনো জনের দ্বারা যারা এটি দেখেছেন।

উপরের উদ্ধৃতিটি দেবার পরে বিপ্লব রহমান আর কথা বাড়াননি। শুধু মিহি স্বরে লিখেছেন- But we are talking on privacy!

এরপর তিনি আর কথা বাড়াননি! এবং হয়তো এখনো তিনি ’খানিকটা সময়’ চেয়ে ‘প্রাইভেসী’ বিষয়ে আমাকে যে সবক দেবার কথা তা তিনি এখনো খুজে পাননি!

এবং এখনো আমি তার কৈফিয়তের অপেক্ষায় আছি…

যাই হোক, ‘টিনটিন’ অপহরণ নিয়ে আমি লেখার কথা থাকলেও পরিস্থিতি প্রেক্ষাপটের কারণে এখনো তা নিয়ে কথা বলার সময় পাচ্ছি না। তার জন্য দু:খ প্রকাশ করছি।

এখন উজো বাজারে আছি সকাল ৯টা ৩৫ মি.। তারিখ- ২৩ এপ্রিল, ২০১৪।) । এখানে এখন বিজিবি অবস্থান করছে। সম্ভবত তারা উজো বাজারের ধারেকাছে কোথাও ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টার স্থাপন করতে জায়গা খুজছে।

উজো বাজারের ধারেকাছে কোথাও কি জায়গা অধিগ্রহণ করে জুম্ম জনগণের আবাসভূমিকে আরো ‘ছোটো’ করার চেষ্টা করো হবে কি!?


তাদের দিকে চেয়ে আছি!

আপাতত ইতি…

বাড়তি কিছু: বিপ্লব রহমানের লেখা নিয়ে যখন ব্লগে লেখা শেয়ার করলাম তখন ফেসবুকের এক বন্ধু লিখলো বিপ্লব রহমানের লেখা ‘পাত্তা না দেওয়াই এখন আপাতত ভাল একটা সমাধান ‘।

বিষয়টিকে আমি কীভাবে দেখি তা নিয়ে মন্তব্য লিখলাম-

যৌক্তিকতা ও ন্যায় নীতিকে ‘প্রতিষ্ঠিত’ করতে শুধু বিপ্লব রহমান নয়, যে কারোর বক্তব্য বা সমালোচনা-নিন্দা-যুক্তির পাল্টা উত্থাপন করা একজন সচেতন ব্যক্তির কর্তব্য বলেই তো বোধহয়…

বিপ্লব রহমান হোক বা অন্য কেউই হোক না কেন তাদের বক্তব্যে যৌক্তিকতা থাকলে আমি তার লেখা পড়ি বা না পড়ি বা তার লেখা ’পাত্তা ’ দিই বা না দিই তার লেখা আরো অনেকজনকে প্রভাবিত করবে এবং অনেকে তার লেখার মাধ্য ভুল কিছু ধারণা পেতেও পারে। সুতরাং এই ভুল ধারণা শোধরাতে যথাসম্ভব আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে এই আমার অভিমত।

সর্বাধিক পঠিত

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষাঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসংগ-১৯৪৭ সাল

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষা তারিখঃ ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ইতিহাস একটি জাতি বা জাতিসত্তা তথা জাতিসমষ্টিকে নানাভাবে প্রভাবিত কর...