লেখাটি লেখার সময় হেডিঙ কী দেবো তা নিয়ে চিন্তা করলাম কিছুক্ষণ। প্রথমে
চিন্তা করলাম হেডিঙ দেবো এভাবে- মন্ত্রীবর, ভিক্ষা ’মাগার’ দরকার নেই,
‘কুকুর’ সামলান! কিন্তু তা যুৎসই মনে করলাম না। তারপর ভাবলাম, হেডিঙ দেবো
এভাবে, ডিয়ার পার্বত্যমন্ত্রী, মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ দেখাবার দরকার নেই।
কিন্তু ভাবলাম, এত সরাসরি ’হিট’ করার মতো হেডিঙ বা শিরোনামা না দিয়ে একটু
মাইল্ড হেডিঙ দিই। তাই উপরের হেডিঙ দিলাম।
প্রসঙ্গে চলে আসি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশেচিঙ এমপি আজ ২৬ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি এসেছেন(আদতে তিনি হলেন প্রতিমন্ত্রী, কিন্তু আমি ভাবলাম সরকার যদিওবা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী তাকে মন্ত্রী পদমর্যাদা না দিন, অন্তত আমার লেখায় তাকে ’মন্ত্রী’ সম্বোধন করে দুধের ঘোলে মেটাবার চেষ্টা করি। তাই তাকে মন্ত্রীই বললাম!)। তিনি খাগড়াছড়ি টাউন হলে আয়োজিত ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। সেখানে তিনি অনেক কথার মধ্যে খুবই ’প্রশংসনীয়’ ‘উজ্জীবিত করার মতো’ ‘হাততালি পাওয়ার মতো’ কিছু কথা বলেছেন। এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা এসব খবর খুবই সত্বর জানতে সমর্থ হলাম।
তিনি সেই সভায় বলেছেন,
কিন্তু তার এই শিক্ষার প্রতি ব্যক্তিগত ‘ভালবাসা’ বা ’অনুরাগ’-এর প্রতি সম্মান রেখেও আমাকে কিছু কথা বলতে হচ্ছে। এবং তা না বলে থাকা সংগত হবে না বা সচেতনতাবোধের প্রকাশ পাবে না বলেই মনে হলো। তাই এই লেখার অবতাড়না।
তিনি সরকারের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য পাবেন অথবা পাবেন না তা নিয়ে কথা বলবো না। আমি বলতে চাই, তিনি যা বলেছেন তা যদি আদতেই বিশ্বাস করেন বা করতে চান তবে বোধকরি তিনি এতসব বাগাড়ম্বর বাদ দিতে পারেন। পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে থাকার যে কারণসমূহ তা তিনি চিহ্নিত করতে পারেন। এবং তিনি যদি সেই কারণসমূহের খোজ নেন তবে তিনি দেখবেন, তার গড়া সরকার বা এই শাসকদের গড়া সরকারই পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের আসল হোতা বা মূল অপরাধী।
সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার পরিষদ(বর্তমানে তা পার্বত্য জেলা পরিষদ নামে পরিচিতি) গঠন করেছে। এবং অনির্বাচিত তল্পিবাহক কিছু ব্যক্তিকে সেখানে বসিয়ে রেখে তিন পার্বত্য জেলার এই প্রশাসনিক পরিষদের কাজ চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কথা ছিলো এই পরিষদসমূহের নির্বাচন তারা দেবে। কিন্তু, তা কথার কথা মাত্র! দশক-যুগ পেরিয়ে নতুন দশক ও যুগ শেষ হবার পথে কিন্তু এই পরিষদকে ‘জনপ্রতিনিধিত্বশীল’ করার দিকে সরকারের রা নেই, চেষ্টা তদবির পর্যন্ত নেই!
কথা হলো, সরকার তার প্রশাসনিক রাজনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন বিভাগসমূহ ভাজা করে বা রান্না করে বা কী যা তা করবে তা নিয়ে মাথা ব্যথা করার কী ই বা প্রয়োজন!
কিন্তু, এতেই বিবাদ যত বিপত্তি!
এই জেলা পরিষদের পদসমূহে তিন পার্বত্য জেলায় সরকার যে সকল অনির্বাচিতদের তাদের তল্পিবাহক হিসেবে বসিয়ে রাখে তারা যে কী চীজ, তারা যে পার্বত্যাঞ্চলের কী ক্ষতি তস্য ক্ষতি তস্যতর জঘন্যতম ক্ষতি করে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল করলে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করলে দিন ও রাতে ঘুম হারাম হতে বাকী থাকার কথা না অন্তত যারা সচেতন তাদের জন্য এটাই সত্য!
এতসব তস্যতর জঘন্য কী ক্ষতি এই পরিষদের সরকারী মনোনীতরা করে যাচ্ছে আমি সেদিকে যাবো না। আজ শুধু বলবো, এই পরিষদের দ্বারা পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার কী ক্ষতি হচ্ছে তা নিয়ে। এখানে বলে রাখি, আমার কাছে কোনো ডাটা বা তথ্য বা পরিসংখ্যান কিন্তু নেই।
আমার কাছে আছে ইতিহাসের সাবঅল্টার্ন নামীয় সেই সুবিশাল তথ্য! শত ডজন মানুষের অভিজ্ঞতা যা অলিখিত!
জেলা পরিষদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারে। আর এই শিক্ষক নিয়োগের সুবাদে জেলা পরিষদের অনির্বাচিত সদস্যরা একজন শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের মাথাপিছু ‘উপরি’ ’পাওনা’ ’ঘুষ’ ধার্য করে ৩ বা ৪ বা ৫ বা ৬ বা ৭ লাখ বা তারও বেশি পরিমাণ টাকা।
শিক্ষক হতে তাই ‘মেধার’ দরকার নেই। দরকার টাকা। দরকার সুবিধামত একটি লাইনের বা লিংকের! এভাবে একজন ক্লাশ ফাইভ পাশ করা ব্যক্তি(নারী বা পুরুষ) বা যে ব্যক্তির নিজের লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগই নেই সেই পেয়ে যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদের লোভনীয় চাকুরি।
অতপর, এই সকল শিক্ষক নামীয় ব্যক্তিরা চাকুরি পেয়ে যায় অর্থের জোরে, লাইন বা লিংকের জোরে।
তারপর তাদের কাছ থেকে শিক্ষা প্রদান বা শিক্ষা দান বা ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া শিখিয়ে দেয়া আশা করা যায় তবে পাওয়া যায় যে অতি নগন্য তা ই যেন দুর্বৈব সত্য!
এবং এতে শত শত অ-শিক্ষক নামীয় শিক্ষকদের নিয়েই আজ পার্বত্যাঞ্চলের প্রাইমারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ ভর্তি হয়ে আছে! তবে ব্যতিক্রমও যে নেই তা তো নয়! কিন্তু ব্যতিক্রম ব্যতিক্রমই।
আর এই কারনেই আজ পার্বত্যাঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার ‘বারোটা’ বেজে যেতে বসেছে।
আজ সেদিকে খেয়াল করলে মাথা ব্যথা করে, চুল ছিড়তে ইচ্ছে করে।
অথচ, সেই সরকারেরই একজন মন্ত্রীবর শিক্ষানুরাগী ‘গরু মেরে জুতা দান’ করে বক্তব্য দেন! তিনি বলেন, বৃত্তির টাকা ২০ লাখ থেকে ৫ লাখ বাড়িয়ে ২৫ লাখ করেন। এতেই তিনি বাহবা পান!
আজকাল কী যে দিনকাল পড়েছে! গরু মারার পরে জুতা দান করলেই বোধহয় আজ সবাই বাহবা প্রদান করে থাকেন!
প্রসঙ্গে চলে আসি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশেচিঙ এমপি আজ ২৬ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি এসেছেন(আদতে তিনি হলেন প্রতিমন্ত্রী, কিন্তু আমি ভাবলাম সরকার যদিওবা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী তাকে মন্ত্রী পদমর্যাদা না দিন, অন্তত আমার লেখায় তাকে ’মন্ত্রী’ সম্বোধন করে দুধের ঘোলে মেটাবার চেষ্টা করি। তাই তাকে মন্ত্রীই বললাম!)। তিনি খাগড়াছড়ি টাউন হলে আয়োজিত ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। সেখানে তিনি অনেক কথার মধ্যে খুবই ’প্রশংসনীয়’ ‘উজ্জীবিত করার মতো’ ‘হাততালি পাওয়ার মতো’ কিছু কথা বলেছেন। এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা এসব খবর খুবই সত্বর জানতে সমর্থ হলাম।
তিনি সেই সভায় বলেছেন,
পিছিয়ে পড়া পার্বত্যাঞ্চলকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। যদি সরকারী অর্থ সহযোগিতা পাওয়া না যায় প্রয়োজনে শিক্ষার জন্য ভিক্ষা মাগবো (করবেন), তবুও পার্বত্যাবাসীকে শিক্ষার দিক থেকে এগিয়ে নেব। (তথ্যসূত্র: সিটিজিটাইমস ওয়েবসাইট)খুবই প্রশংসনীয় কথা! হাততালি পাবার মতো কথা! অর্থাৎ তিনি যে আন্তরিক শিক্ষানুরাগী একজন ব্যক্তি তা তার কথামতো বোঝা যায়। এবং তিনি যে আদতেই শিক্ষার প্রতি ভালবাসা বা অনুরাগ প্রদর্শন করেন, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবে না তা সংগতভাবে বিবেচিত হবে বলেই বোধ হয়। কারণ তিনি নিজেই একজন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি। সুতরাং তিনি জানেন, শিক্ষার মূল্য অনেক অনেক বেশি।
কিন্তু তার এই শিক্ষার প্রতি ব্যক্তিগত ‘ভালবাসা’ বা ’অনুরাগ’-এর প্রতি সম্মান রেখেও আমাকে কিছু কথা বলতে হচ্ছে। এবং তা না বলে থাকা সংগত হবে না বা সচেতনতাবোধের প্রকাশ পাবে না বলেই মনে হলো। তাই এই লেখার অবতাড়না।
তিনি সরকারের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য পাবেন অথবা পাবেন না তা নিয়ে কথা বলবো না। আমি বলতে চাই, তিনি যা বলেছেন তা যদি আদতেই বিশ্বাস করেন বা করতে চান তবে বোধকরি তিনি এতসব বাগাড়ম্বর বাদ দিতে পারেন। পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে থাকার যে কারণসমূহ তা তিনি চিহ্নিত করতে পারেন। এবং তিনি যদি সেই কারণসমূহের খোজ নেন তবে তিনি দেখবেন, তার গড়া সরকার বা এই শাসকদের গড়া সরকারই পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের আসল হোতা বা মূল অপরাধী।
সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার পরিষদ(বর্তমানে তা পার্বত্য জেলা পরিষদ নামে পরিচিতি) গঠন করেছে। এবং অনির্বাচিত তল্পিবাহক কিছু ব্যক্তিকে সেখানে বসিয়ে রেখে তিন পার্বত্য জেলার এই প্রশাসনিক পরিষদের কাজ চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কথা ছিলো এই পরিষদসমূহের নির্বাচন তারা দেবে। কিন্তু, তা কথার কথা মাত্র! দশক-যুগ পেরিয়ে নতুন দশক ও যুগ শেষ হবার পথে কিন্তু এই পরিষদকে ‘জনপ্রতিনিধিত্বশীল’ করার দিকে সরকারের রা নেই, চেষ্টা তদবির পর্যন্ত নেই!
কথা হলো, সরকার তার প্রশাসনিক রাজনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন বিভাগসমূহ ভাজা করে বা রান্না করে বা কী যা তা করবে তা নিয়ে মাথা ব্যথা করার কী ই বা প্রয়োজন!
কিন্তু, এতেই বিবাদ যত বিপত্তি!
এই জেলা পরিষদের পদসমূহে তিন পার্বত্য জেলায় সরকার যে সকল অনির্বাচিতদের তাদের তল্পিবাহক হিসেবে বসিয়ে রাখে তারা যে কী চীজ, তারা যে পার্বত্যাঞ্চলের কী ক্ষতি তস্য ক্ষতি তস্যতর জঘন্যতম ক্ষতি করে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল করলে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করলে দিন ও রাতে ঘুম হারাম হতে বাকী থাকার কথা না অন্তত যারা সচেতন তাদের জন্য এটাই সত্য!
এতসব তস্যতর জঘন্য কী ক্ষতি এই পরিষদের সরকারী মনোনীতরা করে যাচ্ছে আমি সেদিকে যাবো না। আজ শুধু বলবো, এই পরিষদের দ্বারা পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার কী ক্ষতি হচ্ছে তা নিয়ে। এখানে বলে রাখি, আমার কাছে কোনো ডাটা বা তথ্য বা পরিসংখ্যান কিন্তু নেই।
আমার কাছে আছে ইতিহাসের সাবঅল্টার্ন নামীয় সেই সুবিশাল তথ্য! শত ডজন মানুষের অভিজ্ঞতা যা অলিখিত!
জেলা পরিষদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারে। আর এই শিক্ষক নিয়োগের সুবাদে জেলা পরিষদের অনির্বাচিত সদস্যরা একজন শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের মাথাপিছু ‘উপরি’ ’পাওনা’ ’ঘুষ’ ধার্য করে ৩ বা ৪ বা ৫ বা ৬ বা ৭ লাখ বা তারও বেশি পরিমাণ টাকা।
শিক্ষক হতে তাই ‘মেধার’ দরকার নেই। দরকার টাকা। দরকার সুবিধামত একটি লাইনের বা লিংকের! এভাবে একজন ক্লাশ ফাইভ পাশ করা ব্যক্তি(নারী বা পুরুষ) বা যে ব্যক্তির নিজের লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগই নেই সেই পেয়ে যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদের লোভনীয় চাকুরি।
অতপর, এই সকল শিক্ষক নামীয় ব্যক্তিরা চাকুরি পেয়ে যায় অর্থের জোরে, লাইন বা লিংকের জোরে।
তারপর তাদের কাছ থেকে শিক্ষা প্রদান বা শিক্ষা দান বা ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া শিখিয়ে দেয়া আশা করা যায় তবে পাওয়া যায় যে অতি নগন্য তা ই যেন দুর্বৈব সত্য!
এবং এতে শত শত অ-শিক্ষক নামীয় শিক্ষকদের নিয়েই আজ পার্বত্যাঞ্চলের প্রাইমারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ ভর্তি হয়ে আছে! তবে ব্যতিক্রমও যে নেই তা তো নয়! কিন্তু ব্যতিক্রম ব্যতিক্রমই।
আর এই কারনেই আজ পার্বত্যাঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার ‘বারোটা’ বেজে যেতে বসেছে।
আজ সেদিকে খেয়াল করলে মাথা ব্যথা করে, চুল ছিড়তে ইচ্ছে করে।
অথচ, সেই সরকারেরই একজন মন্ত্রীবর শিক্ষানুরাগী ‘গরু মেরে জুতা দান’ করে বক্তব্য দেন! তিনি বলেন, বৃত্তির টাকা ২০ লাখ থেকে ৫ লাখ বাড়িয়ে ২৫ লাখ করেন। এতেই তিনি বাহবা পান!
আজকাল কী যে দিনকাল পড়েছে! গরু মারার পরে জুতা দান করলেই বোধহয় আজ সবাই বাহবা প্রদান করে থাকেন!
No comments:
Post a Comment