তারিখ: ২৮ জুলাই, ২০১৪
সকাল ৬.০৫ টা
সকলকে শুভ সকালের চেতনাময় স্নিগ্ধ শূভেচ্ছা!
আজ সোমবার। সাজেকের উজো বাজারের সাপ্তাহিক বাজারবার। উজো বাজারের কয়েক কিলোমিটার দূরত্বের পাহাড়ি গ্রাম থেকে পাহাড়ি নারী পুরুষ তাদের উৎপাদিত জিনিসপত্র ফল ফলাদি, ছাগল গরু মোরগ ইত্যাদি হাতে করে বাজারে নিয়ে আসে দুএকটি টাকা উপার্জন করার জন্য। উজো বাজারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মাত্র দুই বছর হলো। এরআগে বাঘাইহাট বাজারে তারা যেত। কিন্তু ২০০৭-২০০৮-২০১০ সালের সাম্প্রদায়িক হামলাকান্ডের পর সেই বাজারে পাহাড়িরা আর যায় না। তারা একত্রিত হয়ে বসিয়েছে উজো বাজার নামে নতুন বাজার। আজও নিশ্চয় বাজারে বিক্রেতারা আসবেন, আসবেন বেনিয়া ব্যবসায়ীরা।
শান্তিপূর্ণ থাকবে আজকের বাজারবার সবার কামনা এটাই!
তারা মামলা দিয়ে জেরবার হয়রানী করতে চেয়েছিল
তারা মানে, জুম্ম জনগণকে তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করতে চেয়েছিল, তারা মামলা দিয়ে জেরবার হয়রানী করে ভিটে থেকে উচ্ছেদ করতে চেয়েছিল। সেজন্য তারা একই সাথে মাত্র দুয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে উজো বাজারের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গ্রামের কার্বারীকে সতকীকরণ নোটিশ জারি করেছিল।
তাতে তারা মানে জবরদখলবাজদের চাকুরেরা লিখেছিল- “আপনাকে এই মর্মে নোটিশ প্রদান করা যাইতেছে যে, নিম্নে বর্ণিত তপসীল ভূক্ত জায়গায় আপনি ঘর বাড়ী বাগান চাষাবাদ করার পায়তারা করিতেছেন। নোটিশ প্রাপ্তির পর হইতে আপনী ঐ সমস্ত কাজ থেকে বিরতি থাকিবেন। এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকিবেন। এই বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যেতে পারে। নোটিশ প্রাপ্তির পর থেকে কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য বলা গেল।”
বাঘাইহাটের রিজার্ভ ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দিন চিঠি দিয়েছিল ১৯ জুলাই, ২০১৪ ইং তারিখে আর বাঘাইছড়ি পুলিশ থানার অফিসার ইনচার্জ চিঠি দিয়েছিল ২২ জুলাই, ২০১৪। অর্থাৎ, তাদের যুগপৎভাবে একই উদ্দেশ্য ছিলো! তাদের উদ্দেশ্য ছিলো, শুধু ‘বুদ্ধমুর্তি’ নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়া নয়, তাদের পেছনের উদ্দেশ্যছিলো জুম্ম জনগণকে উজো বাজার ও তার আশপাশ থেকে উচ্ধে করা।
‘আইন’এর ভয় দেখিয়ে ’আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল’ থাকার ওজর দেখিয়ে তাারা এই কাজ করতে ছেয়েছে। কিন্তু এতবছর ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার জুম্মজনতাকে তাদের নিজ বাস্তুভিটা থেকে ‘কোন আইন’এর ভিত্তিতে তারা উচ্ছেদ করেছে তার কথা তারা চেপে যায়!
দখলবাজ জবরদখলকারীদের প্রতি ঘোষনা! সাজেকবাসী ভুমিচ্যুত হতে হতে এমনিতেই জেরবার! সুতরাং তাদের জেরবার করার চেষ্টা মাঠে মারা যাবার সম্ভাবনা বেশি!
#সাজেক #সাজেক #সাজেক #সাজেক আপডেট !
বেড়ায় টাঙিয়ে রাখা বুদ্ধমূর্তির ছবি তারা ছুড়ে দিয়েছিল
গতকাল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা জানালেন, ২৪ তারিখের দিকে তিনি উজোা বাজরের দিকে যাচ্ছিলেন। এই সময় একটি আর্মি গাড়ি উজো বাজারের যেখানে বুদ্ধমূর্তি নির্মাণ করার কথা সেখানে এসে তারা থামলো। সেখানে বেড়ার ফাকে একটি বুদ্ধমূর্তি টাঙিয়ে রেখেছছিল আন্দোলনকারীরা। এক আর্মি সেই ছবি বেড়া থেকে খূলে নিয়ে তা মুচড়ে ফেলে দিলো পিচঢালা পথে। ‘জুম্ম’ সিদেসাধা মহিলা চেয়ে থাকলেন সেই ঘটনা। আর্মিরাও তাকে দেখে থাকলো। এরপর তারা চলে যাবার সময় তিনি তা পথ থেকে তুলে নিয়ে সম্মান ও শ্রদ্ধাবনত হয়ে তা আগের জায়গায় তুলে রাখলেন। আর্মিরা তাকে দেখে চলে গেল।
আর্মি পুলিশ প্রশাসনের কেউই ঈদের আনন্দ ছুটি ভোগ করতে পারেনি
কাল জানতে পারলা্ম, সাজেকে যেসকল আর্মি ও পুলিশ চাকুরি করছে তাদের কেউই ঈদের ছুটি পায়নি। তারা বড় সাধ করে তাদের নিজের বাড়িতে ঈদ করার জন্য সাজেক থেকে আনারস-কাঠালসহ নানা ফলফলাদি কিনেছিল। কিন্তু তা পচে গিয়েছে!
আত্মীয় পরিজনদের সাথে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে না পারায় তারা যেমন নিরানন্দে আছে তেমনি তারা ক্ষুব্ধ ক্রোধান্বিতও। কিন্তু এই বেদনার কথা তারা কাকে বলবে?
রাষ্ট্রযন্ত্র তো তাদের ’কেনা পালেয়ায়ান’ ‘পাহাড়াদার’ চৌকিদার ব্যতিত কিছুই মনে করে না!
সবাই ভালো থাকবেন।
No comments:
Post a Comment